অগ্নিলাদেবী প্রায়শই গুনগুনিয়ে গান করতেন। সে আবার যেনতেন গান নয়- রবীঠাকুরের গানের সাথেই তার ভীষণ ভাব! গানের কথাগুলোর মধ্যেই এক অদৃশ্য অবয়ব তৈরি করতেন অগ্নিলাদেবী। সে অবয়ব ছিল তার প্রিয় মানুষের একান্ত গোপন প্রিয় মানুষের!
ভোর বেলার প্রথম প্রহরে আধো-অন্ধকারে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ার বেশ আগে আগেই চঞ্চল পায়ে চশমা হাতে বাইরে হাঁটতে বেরিয়ে পড়তেন হিমাংশুবাবু। হাঁটতে হাঁটতে সূর্যোদয় দেখতেই যেন তেনার দিব্যি ভাল লাগত। বেশ কয়েক পাড়া পেরুতেই তিনি রোজ খেয়াল করতেন- একটি বিশাল বাড়ির জানলায় পর্দার আড়ালে কে যেন দাঁড়িয়ে তাকে দেখছে প্রতিনিয়ত, যেন `তিনি এলেই তার প্রতীক্ষার অবসান হয়!’
অগ্নিলাদেবী প্রায়শই এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে আড়াল হতেই দেখতেন হিমাংশুবাবুকে! দেখতেন, তার চঞ্চল চলন, চারকোণা চশমার ভেতরে থাকা আকুলময় চোখ দুইটি আর হাস্যজ্জ্বল একটি চেহারা!
অগ্নিলাদেবী যেন এ মায়ারই প্রেমে পড়েছিলেন- তার শখের ‘হিমাংশুবাবু’র!
গল্পকার: সংস্কৃতিকর্মী, চট্টগ্রাম