বাফেলো, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: একের পর এক বন্দুক হামলায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় প্রতিদিনই দেশটির কোথাও না কোথাও ঘটছে হামলার ঘটনা। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, বিপণি বিতান – কোথাও নিরাপদ নয় সাধারণ মানুষ। হুটহাট করে ঠুনকো অজুহাতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানালেও নিজ নাগরিকদের কি সুরক্ষা দিতে পারছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার?
শনিবার (২৭ এপ্রিল) নিউইয়র্কের বাফেলোতে বন্দুকধারীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। এ খুনের প্রতিবাদে রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নামাজের পর হাজারো মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে জড়ো হন বাফেলো মুসলিম সেন্টারে। বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।
গেল মাসে নিউইয়র্ক সিটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১৯ বছর বয়সি বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও। পরিসংখ্যান বলছে, ‘কেবল চলতি বছরই বন্দুক হামলায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১২৬ জন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল সাড়ে ৬০০’র বেশি, আর ২০২২ সালে ছিল ৬৪৪।’
সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বন্দুক সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ২০২১ সালে, ৬৯০ জন।
বন্দুক হামলার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রায়ই প্রাণ হারান নিরীহ সাধারণ মানুষ। সংবাদ মাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন বলছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় খুনের শিকার হওয়াদের বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ ও তরুণ। এ অবস্থায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন সংস্কার ও দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। নীতি পরিবর্তনেরও ডাক দিচ্ছেন অনেকে।’
২০২২ েএর ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ইউভালদে শহরের একটি প্রাথমিক স্কুলে এলোপাতাড়ি হামলা চালায় অস্ত্রধারী। এতে প্রাণ হারান ১৯ জনের বেশি শিক্ষার্থী। ভয়াবহ ওই হামলার পর বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্রে জননিরাপত্তা নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক।
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন সংস্কারের দাবিতে দেশজুড়ে গড়ে ওঠে জনমত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্র যখন তখন নাক গলালেও নিজ দেশের ক্ষেত্রে যেন একেবারেই উদাসীন। প্রায় প্রতিদিনই দেশটির কোথাও না কোথাও ঘটছে বন্দুক সহিংসতা। বলা চলে, কোথাও নিরাপদ নয় সাধারণ মানুষ।