মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

সরকার সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে

শনিবার, মে ১১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘জাতি আজ চরম সংকটময় সময় পার করছে। দিন যতই যাচ্ছে সংকটের গভিরতা ততই বাড়ছে। পূর্বে আমরা যেটাকে সংকট বলেছি, এখন মনে হচ্ছে সেটা কোন সংকটই ছিল না। দেশের বেশির ভাগ মানুষ আয় দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। জিনিসপত্রের মূল্য প্রতিদিনই বাড়ছে। টাকার অবমূল্যায়নে ডলারের মূল্য বেড়ে গেছে, মূল্যস্ফিতি হচ্ছে। ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানী সংকোচন করেছে। এতে বহু কলকারখানা বন্ধ হয়ে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ কাজ পাচ্ছে না, খেতে পাচ্ছে না। এমন বাস্তবতায় একটি শ্রেণী ইউরোপের স্টাইলে জীবন যাপন করছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে তারা।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ের মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরর মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ‘রাজনীতিতে গুণগত একটি পরিবর্তন এসেছে। একটি শ্রেণি কিছু সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। তারা ভাবছে, সরকার তো জেকে বসেছে, থাকবেই। তাদের সঙ্গে লাইন দিয়ে যেটুকু পাওয়া যায়। আবার সরকার যাদের নিচ্ছে না, তাদের বাধ্য হয়ে সরকারের বিপক্ষে থাকতে হচ্ছে। তারা না চাইলেও জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে হচ্ছে। আমাদের কিছু জায়গা দিয়েছে এটাই হচ্ছে, সর্বনাশ। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিকে দেশে আর রাজনীতি থাকবে না, বিরাজনীতিকরণ চলছে। জনগনকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আজকাল নির্বাচনে লোকজন যায় না, তাদের বক্তব্য আমরা গেলেই কী আর না গেলেই কী। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে মানুষের কাঁধে বসে আছে। সামনের দিকে রাজনীতি আরো কঠিন হবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা মানুষের পাশে থাকব নাকি সুযোগ-সুবিধার পক্ষে থাকব। জনগণের পক্ষে থাকতে হলে ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা থাকতে হবে। যারা সুযোগ-সুবিধার লোভে পড়েছে, এটা স্বল্প সময়ের জন্য। সামনের দিকে হয়তো তাদের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। যারা সরকারের দালালী করেছে, তাদের কিন্তু লাথি দিয়ে ফেলে দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের চাহিদা ১৩-১৬ হাজার মেগাওয়াট। আচমকা গেল বছর ১৭ হাজার হয়ে গিয়েছিল। তখন ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া দশ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্লান্ট বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেয়া হয়নি। অথচ ২৭ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হয়েছে। ব্যবহার করতে পারছেন না, তাহলে বানালেন কেন? প্রয়োজনের চেয়ে কিছু বেশি বানাতে পারেন। তারপরও তো লোডশেডিং আছে। এক লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ। বসিয়ে বসিয়ে পয়সা দেয়া হচ্ছে, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আরো উৎপাদন কেন্দ্র বানানো হচ্ছে, সেগুলোতেও বসিয়ে বসিয়ে পয়সা দিতে হবে। ঋণের ২০ ভাগ নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। অথচ বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে। লোকসান কমানোর জন্য বছরে তিন বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তিন টাকা থেকে বছরে আট টাকা হয়েছে ইউনিট। সামনে আরো তিনগুণ বেড়ে যেতে পারে।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল হক সামছুর সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের।