ডেস্ক রিপোর্ট: মার্কিন সংসদের নিুকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের ‘দগদগে ঘা’ এখনো শুকায়নি। সেই ‘কাটা ঘায়েই এবার নুন ছিটানোর’ যজ্ঞ শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের চিরশত্রু ভারতের সাথে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছেই যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে যাচ্ছে দেশটি। অক্টোবরের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে মহড়াটি। খবর সিএনএনের।
ভারতের উত্তরাখন্ডের আউলি অঞ্চলে শুরু হবে এ মহড়া। মহড়াটি ‘যুদ্ধ অভ্যাস’ নামে পরিচিত, ১৮তম বার্ষিক যৌথ অনুশীলনের অংশ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, মহড়ার জন্য বাছাইকৃত স্থানটি চীন-ভারতের বিতর্কিত সীমান্তসংলগ্ন। দুই দেশের মধ্যে জায়গাটি নিয়ে বিরোধ শুরু থেকেই। ১৯৬১ সালের যুদ্ধের পর থেকে এটিকে ডি-ফ্যাক্টো সীমানা করা হয়। কিন্তু, ২০২০ সালের জুন মাসে ভারতের একটি রাস্তা নির্মাণে আপত্তি জানায় চীন। কারণস্বরূপ, জায়গাটি নিজেদের বলে দাবি জানায় বেইজিং। ফলে তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই দেশ। এতে, ২০ ভারতীয় ও চারজন চীনা সেনা নিহত হন। সম্প্রতি অবস্থা ফের খারাপের দিকে মোড় নেয়। সীমান্তবর্তী এলাকায় প্যাংগং সো লেকে একটি সেতু বানানোর ঘোষণা দেয় চীন। এটিকে ‘অবৈধ দখল’ এর আখ্যা দিয়েছে ভারত।
বিশ্লেষকদের মতে, চলমান এসব উত্তেজনার মধ্যেই ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া বেইজিংকে আরো ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। এ কারণে এশিয়াজুড়ে বাড়তে পারে অস্থিরতা।
এ দিকে, মহড়ার নামে একাধিক চীনা নৌযান অতিক্রম করেছে তাইওয়ান প্রণালির মধ্যরেখা। তাইপে জানায়, উপকূলভিত্তিক জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চীনের চার দিনব্যাপী সামরিক মহড়া দেখা যায় স্বশাসিত দ্বীপটির চার পাশে।
এ সময় দুই দেশের যুদ্ধ জাহাজগুলোকে সমুদ্রে ‘ইঁদুর বিড়াল’ খেলতে দেখা গেছে। চীনের পরীক্ষামূলকভাবে ছোড়া ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রথম বারের মত উড়ে গেছে রাজধানী তাইপের ওপর দিয়ে। মহড়া চলাকালে রোববার (৭ আগস্ট) দুই দেশের দশটির মত যুদ্ধজাহাজ একে অপরের গাঘেঁষে চলাফেরা করে তাইওয়ান প্রণালিতে।
দ্বীপটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চীনের কয়েকটি সামরিক জাহাজ, বিমান ও ড্রোন তাইওয়ান ও এর নৌবাহিনীর ওপর ‘আক্রমণের অনুরূপ’ মহড়া চালিয়েছে।’
এর ‘যথোপযুক্ত’ প্রতিক্রিয়া জানাতে তাইপেও বিমান ও জাহাজ পাঠিয়েছে।’ মূলত চীনা জাহাজগুলো তাইওয়ানের কড়া নজরদারির মধ্যেই ছিল। মধ্যরেখা অতিক্রমে দেয়া হয়েছে বাধাও।