সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

টি-২০ বিশ্বকাপ/নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সুপার এইটের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

শুক্রবার, জুন ১৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

কিংসটাউন: সাকিব আল হাসানের হাফ-সেঞ্চুরি ও স্পিনার রিশাদ হোসেনের দারুন বোলিংয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দিবাগত রাতে গ্রুপ ‘ডি’তে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ২৫ রানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। এ জয়ে তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক হারে চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে দুই পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে নেদারল্যান্ডস। নেপাল দুই ম্যাচে ও শ্রীলংকা তিন ম্যাচে সমান এক করে পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। এ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে শ্রীলংকার বিদায় নিশ্চিত হল।

প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৫৯ রান করে বাংলাদেশ। সাকিব ৪৬ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন। উত্তরে ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৩৪ রান করে ম্যাচ হারে নেদারল্যান্ডস। ম্যাচ সেরা হন সাকিব।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংসটাউনে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। অফ স্পিনার আরিয়ান দত্তর বলে রিভার্স সুইপ করে স্লিপে ক্যাচ দেন তিন বলে এক রান করা শান্ত। অধিনায়কের বিদায়ের পর তৃতীয় ওভারে দুইটি চার ও একটি ছক্কায় ১৮ রান তুলেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান। তানজিদ যখন রানের চাকা ঘুড়ানো শুরু করেছেনই তখন লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। আরিয়ানের করা চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে স্লগ সুইপ করে স্কয়ার লেগে সিব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখটের দারুন ক্যাচে বিদায় নেন দুই বলে এক রান করা লিটন। ২৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় ক্রিজে তানজিদের সাথী হন সাকিব। ষষ্ঠ ওভারে চারটি চারে ১৯ রান নেন সাকিব। এতে পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেটে ৫৪ রান তুলে বাংলাদেশ। সাকিবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়েছেন তানজিদও। সপ্তম ওভারে তানজিদের দুইটি চারে ১২ রান পায় বাংলাদেশ। কিন্তু, নবম ওভারে পেসার পল ভ্যান মিকেরেনের শর্ট বলে মিড উইকেটে বাস ডি লিডকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ২৬ বলে ৩৫ রান করা তানজিদ। তৃতীয় উইকেটে সাকিব-তানজিদ ৩২ বলে ৪৮ রান যোগ করেন। দলীয় ৭১ রানে তানজিদের বিদায়ে উইকেটে আসেন ইনফর্ম তাওহিদ হৃদয়। সাবধানে খেলে উইকেটে সেট হওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু, স্পিনার টিম প্রিঙ্গলের বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড আউট হন ১৫ বলে নয় রান করা হৃদয়। হৃদয় ফেরার পর ক্রিজে এসে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দুইটি করে চার-ছক্কায় নেদারল্যান্ডসের বোলারদের উপর চড়াও হন তিনি। ১৭তম ওভারে ১৬ রান পায় বাংলাদেশ। পরের ওভারে টি-টোয়েন্টিতে ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৮ বল খেলা সাকিব। ২০২২ সালের অক্টোবরে ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ও ১৯ ইনিংস পর হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব। সাকিবের হাফ-সেঞ্চুরির পরই মিকেরেনের শর্ট বলে পুল করে ডিপ মিড উইকেটে এঙ্গেলব্রেখটের হাতে ধরা পড়েন ২১ বলে ২৫ রান করা মাহমুদুল্লাহ। সাকিব-মাহমুদুল্লাহ ৩২ বলে ৪১ রান যোগ করেন। মাহমুদুল্লাহ ফেরার পর ইনিংসের শেষ ১৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৯ রান যোগ করে বাংলাদেশকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন সাকিব ও জাকের আলি অনিক। নয়টি চারে ৪৬ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন সাকিব। তিনটি বাউন্ডারিতে সাত বলে অনবদ্য ১৪ রান করেন জাকের। নেদারল্যান্ডসের আরিয়ান ও মিকেরেন দুইটি করে উইকেট নেন।

১৬০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২২ রানের সূচনা পায় নেদারল্যান্ডস। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট উপহার দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। কাভারে হৃদয়কে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন দুইটি চার ও একটি ছক্কায় ১৮ রান করা মাইকেল লেভিট। পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন আরেক পেসার তানজিম হাসান। প্রতিপক্ষ বোলারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ১২ রানে ফিরেন ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড। ৩২ রানে দুই উইকেট পতনের পর নেদারল্যান্ডসের হাল ধরেন বিক্রমজিত সিং ও সিব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট। ২৩ বলে ৩৭ রান যোগ করে উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছিলেন দুইজনে। এ অবস্থায় মাহমুদুল্লাহকে আক্রমণে আনেন টাইগার অধিনায়ক শান্ত। নিজের তৃতীয় ডেলিভারিতে সাফল্য পান মাহমুদুল্লাহ। উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড আউট হন তিনটি ছক্কায় ১৬ বলে ২৬ রান করা বিক্রমজিত। দশ ওভার শেষে তিন উইকেটে ৭৪ রান তুলে নেদারল্যান্ডস। চতুর্থ উইকেটে ৩১ বলে ৪২ রানের জুটিতে নেদারল্যান্ডসকে লড়াইয়ে রাখেন এঙ্গেলব্রেখট ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। এ জুটি ভাঙ্গতে চিন্তায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। ১৫তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে চিন্তা মুক্ত করেন স্পিনার রিশাদ। ২২ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ রান এঙ্গেলব্রেখটকে এবং বাস ডি লিডেকে খালি হাতে বিদায় দেন রিশাদ। পরের দুই ওভারে এডওয়ার্ডসকে (২৫) মুস্তাফিজ ও লোগান ফন বিককে (২)আউট করেন রিশাদ। ১১৭ রানে সাত উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত আট উইকেটে ১৩৪ রান করে ডাচরা। বাংলাদেশের রিশাদ ৩৩ রানে তিন ও তাসকিন ৩০ রানে দুই উইকেট নেন। এছাড়া, মুস্তাফিজুর-তানজিম ও মাহমুদুল্লাহ একটি করে উইকেট নেন।

আগামী ১৭ জুন কিংসটাউনে গ্রুপ পর্বে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।