নয়াদিল্লি, ভারত: নির্বাচনের পর সোমবার (২৪ জুন) শুরু হয়েছে ভারতের অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশন। টানা দশ দিনের এ অধিবেশনের প্রথম দিন নতুন নির্বাচিত সাংসদদের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে পাল্টাপাল্টি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সংসদ। তবে, এসব স্লোগানের কিছু ছিল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। বিজেপির সাংসদ ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের বিপরীতে বিরোধীরা বন্দে মাতরম, জয় হিন্দ, জয় বাংলা, জয় মমতাসহ নানা স্লোগান দেন। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সাংসদের মুখে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিও উচ্চারিত হয়। মঙ্গলবার (২৫ জুন) অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে ‘জয় ফিলিস্তিন’ স্লোগান দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন সর্বভারতীয় মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রেসিডেন্ট আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। সংবাদ বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) অষ্টাদশ লোকসভার অধিবেশনে নিজের শপথ গ্রহণ শেষ করে আসাদুদ্দিন ওয়াইসি স্লোগান দেন, ‘জয় ভিম, জয় মিম, জয় তেলিঙ্গানা, জয় ফিলিস্তিন।’
ওয়াইসির স্লোগানের শেষ অংশে অপ্রত্যাশিতভাবে ‘জয় ফিলিস্তিন’ শব্দটি ব্যবহারের আপত্তি জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানান ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাংসদরা। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করা বিজেপির রাধা মোহন সিং ঘোষণা করেন, ওয়াইসির স্লোগানটি সরকারি রেকর্ড থেকে বাদ দেয়া হবে। ব্যাপারটি নিয়ে কয়েক মিনিটের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের জন্য শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্থবিরতাও দেখা দেয়। পরে অবশ্য যথারীতি অনুষ্ঠান চলতে থাকে।
বিতর্কের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে হায়দরাবাদ থেকে পঞ্চম বারের মত বিজয়ী সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বিজেপির আপত্তির কারণ জানতে চান। পরবর্তী তিনি সাংবাদিকদের কাছেও দাবি করেন, তার স্লোগান ‘জয় ভিম, জয় মিম, জয় তেলিঙ্গানা, জয় প্যালেস্টাইন’-এর মধ্যে ভুল কিছু ছিল না। ওই স্লোগানের মধ্যে ভারতের সংবিধান পরিপন্থী কিছু ছিল না বলে উল্লেখ করেন তিনি। একটি নিপীড়িত জাতি হিসেবে ফিলিস্তিনিদের প্রসঙ্গ টেনেছেন তিনি। ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে মহাত্মা গান্ধী কী বলেছিলেন, সেই ব্যাপারটিও পড়ে দেখার আহ্বান জানান ওয়াইসি।
ঐতিহাসিকভাবেই ফিলিস্তিনিদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সহমর্মিতা ও সমর্থন পোষণ করে ভারত। তবে, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে গেল তিন দশকে ইসরায়েলের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে দেশটির। এর ফলে, দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারগুলো সব সময়ই ইসরায়েলের সাথে প্রয়োজনীয় সম্পর্ক ও ফিলিস্তিনের প্রতি ঐতিহাসিক সমর্থন- এ দুইটি ব্যাপারের মধ্যে সতর্কভাবে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করে আসছে।