ঢাকা: আগামী বছরের মধ্যে ঢাকা বাইপাস রোডের অবকাঠামোর কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে সড়ক নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন পর্যন্ত সড়কটির ৬০ শতাংশের বেশি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাইপাসটির কাজ শেষ হলে ঢাকায় না ঢুকে জয়দেবপুর থেকে মদনপুর পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে যাওয়া যাবে। দেশের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তির সড়ক হবে এটি।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) গাজীপুরের মীরের বাজার এলাকায় সিক্লাব রিসোর্টে মিডিয়া পাবলিক ডেতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর পূর্বে, বাইপাসটির বিভিন্ন অংশের চলমান কার্যক্রম সরজমিনে দেখানো হয় সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের। ওই সময় প্রকল্পটির কে-১২ রেলওয়ে ওভারপাস (মিরের বাজার ফ্লাইওভার) ও ফুটপাথ নির্মাণ কাজ দেখানো হয়। পরে চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) ও চায়না এবং বাংলাদেশী মিডিয়ার আগ্রহের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে এ এক্সপেসওয়ে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সিচুয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ (গ্রুপ) কর্পোরেশন লিমিটেড (এসআরবিজি), শামীম এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (এসইএল) এবং ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (ইউডিসি) কাজ করছে। এ প্রকল্পের আর্থিক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি প্রকল্পটিতে পূর্বের দুই লেন রাস্তা নতুন করে চারলেন করা হচ্ছে। এছাড়া, পাশে দুইটি সার্ভিস লেন থাকবে ওইসব এলাকার যানবাহন চলাচলের জন্য। পুরো সড়কে পূর্বে যেখানে দুই ঘন্টা সময় লাগত, সেটা আধ ঘন্টায় নেমে আসবে।
প্রকল্পের খরচ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে মধ্যে রাস্তাটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরে না ঢুকেই বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন সহজেই দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করতে পারবে।
মিডিয়া ডেতে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিয়াও ঝিমিং বলেন, ‘এ এক্সপ্রেসওয়ে বাংলাদেশের মহাসড়কে একটি নয়া মাত্রা যোগ করবে। এটি নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে। পাশাপাশি, এ সড়ক ঢাকার ট্রাফিক নেটওয়ার্কের উন্নতি, যানজট নিরসন ও প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার পরে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।’
জিয়াও আরো বলেন, ‘প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য তৃতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে একটি বাস্তব সহযোগিতা প্রকল্প হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে; যা চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চ মানের সহযোগিতার উদাহরণ।’
অনুষ্ঠানে সিইএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং জিয়ানশি বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং চীন-বাংলাদেশ-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরের আওতায় চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে এমন সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করতে থাকবে। দুই দেশের এ প্রচেষ্টার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে ও পারস্পরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিইএবির আরেক ভাইস প্রেসিডেন্ট উ কিডং, ডিপিডিসির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দ ও প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার শি বো এবং ইয়াং জু।