লন্ডন, যুক্তরাজ্য: যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। দেশটিতে টানা ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টির এবার ভরাডুবি হয়েছে। এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টির মনোনয়নে জয়লাভ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার প্রার্থী। সংবাদ বিবিসির।
যুক্তরাজ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে কোন দলের ৩২৬ আসনের প্রয়োজন। লেবার পার্টি ৪১২ আসনে জয় নিশ্চিত করেছে। অন্য দিকে, কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন।
ক্ষমতাসীন দলের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এরই মধ্যে পরাজয় মেনে নিয়ে লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। লেবার পার্টির বিশাল এ জয়ের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার প্রার্থীও বাজিমাত করেছেন।
রুশনারা আলী: লেবার পার্টি থেকে টানা পঞ্চম বারের মত সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন রুশনারা আলী। টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে জিতেছেন তিনি। রুশনারা আলী ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী আজমল মাশরুর পেয়েছেন ১৪ হাজার ২০৭ ভোট। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাংসদ রুশনারা আলী। লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে ২০১০ সাল থেকে এর পূর্বে টানা চার বার সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। ২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা আলী। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
টিউলিপ সিদ্দিক: যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে জয় পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকও। ব্রিটেনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে সাংসদ হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়েছেন টিউলিপ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন আট হাজার ৪৬২টি ভোট। জয়ের পর প্রতিক্রিয়ায় টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের দোয়ায় চতুর্থ বারের মত আমি নির্বাচিত হলাম।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশি কমিউনিটি সব সময় আমাকে সমর্থন করে। আমি তাদের প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ যে, তারা এবারো আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।’
রুপা হক: এবারের নির্বাচনে পশ্চিম লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন রুপা হক। তিন মোট গণনাকৃত ভোটের ৪৬ দশমিক আট শতাংশ পেয়েছেন। লেবার পার্টির মনোনয়নে ২০১৫ সালে প্রথম বারের মত সাংসদ নির্বাচিত হন রুপা হক। এরপর টানা তিন বার তিনি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এবারো লেবার পার্টির টিকিটেই জয়লাভ করেছেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে লেবার পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রুপা হক। তাকে সর্বদলীয় সংসদীয় মিউজিক গ্রুপের ভাইস চেয়ার ও ক্রসরেলের সর্বদলীয় সংসদীয় পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
আফসানা বেগম: পূর্ব লন্ডনের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে দ্বিতীয় বারের মত জয় পেয়েছেন আফসানা বেগম। মোট ১৮ হাজার ৫৩৫টি ভোট পেয়ে এবারের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন তিনি। আফসানার প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রিন পার্টির নাথালি বেইনফিট পাঁচ হাজার ৯৭৫টি, কনজারভেটিভ পার্টির ফ্রেডি ডউনিং চার হাজার ৭৩৮টি, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফসানার প্রাক্তন স্বামী এহতেশামুল হক চার হাজার ৫৫৪টি ভোট পেয়েছেন। জয়ের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে তিনি বলেন, ‘পুনর্নির্বাচিত হতে পেরে আমি আনন্দিত।’