সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান মিজা আজমের

শুক্রবার, জুলাই ১২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন প্রবাসীদের সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংসদ মির্জা আজম বলেছেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্য নায়ক রাজাকারের দোসর জিয়াউর রহমানের পুত্র তারেক রহমান লন্ডনে বসে শেখ হাসিনাকে খুন করতে চায়। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশকে তারা পাকিস্তান বানাতে চায়। এ জন্যে ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সজাগ থাকতে হবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে। আর এটা সকলেই জানি যে, ষড়যন্ত্রের মূল ঘাঁটি হচ্ছে এ যুক্তরাষ্ট্র।’

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার উদ্যোগে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় সিটির জ্যাকসন হাইটসে ‘শেফ মহল’ পার্টি হলের এ সমাবেশে মির্জা আজম আরো বলেন, ‘খন্দকার মোশতাক ও জিয়া গংদের ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরানো। সে অভিপ্রায়ে প্রতি রাতেই সামরিক জান্তা জিয়ার নির্দেশে ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় কারাগার ও আশপাশে শত শত মানুষকে ফাঁসি দেয়া হয়- যার প্রায় সকলেই ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উজ্জীবিত সামরিক অফিসার।’

তিনি বলেন, ‘সেই জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি এখন একই খেলায় মেতে উঠেছে। শেখ হাসিনাকে খুনের একের পর এক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বেশ কয়েক দফা হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু, আল্লাহর রহমতে প্রতি বারই তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। শেখ হাসিনাকে খুনের সেই নীল নক্শা বাস্তবায়িত করতে এখন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির সহায়তা নিয়ে তারেক রহমান বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের তকমা দিতেও কুন্ঠা করছে না।’

মির্জা আজম বলেন, ‘একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারিরা ঘুনাক্ষরেও আশা করেননি যে, তারা বেঁচে থাকবেন। কিন্তু, তারপরও পাক হায়েনার দল ৩০ লাখ বাঙালিকে খুন করেছে। খুনের হুলিখেলা চলছে এখনো সেই একাত্তরের মতই রাজাকার আর বিএনপি মিলে।’

প্রবাসের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে মির্জা আজম বলেন, ‘১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় সম্মান পুনরুদ্ধার করা হয়। ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা চালু করেন। এখন স্মার্ট কার্ড দেয়া হচ্ছে। যাবতীয় সুযোগ সুবিধা বহাল করা হয়েছে।’

তিনি বাংলাদেশে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এটা খুবই দু:খজনক। তাই, কারা এমন আন্দোলনে মদদ দিচ্ছে, সেটিও ভেবে দেখতে হবে। ইতিমধ্যেই বিএনপির নেতা রুহুল কবীর রিজভি বলেছেন যে, এর চেয়ে পাকিস্তানেই তারা ভাল ছিলেন। এ জন্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিলুপ্তির আন্দোলনে তারা মদদ দিচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে রাজাকারের দল।’

সমাবেশে ২৮ মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া। বিশেষ ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ কর্মসূচিকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার উদাত্ত আহবান জানান ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে বিরাজিত সুযোগ-সুবিধার কথা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেন।

কন্সাল জেনারেল বলেন, ‘নিউইয়র্ক কন্স্যুলেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।’

সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১’-এর যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কম্যুনিকেশন্স ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের স্বাগত বক্তব্যের পর অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বলেই মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রীয় সম্মান পাচ্ছেন। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মডেলে পরিণত হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনায় প্রবাসীরাও আজ ঐক্যবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন।

ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন ও বাকসুর সাবেক জিএস প্রদীপ কর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মঞ্জুর আহমেদ, রেজাউল বারি, হাবিব রহমান আকন্দ, আবুল বাশার চুন্নু, মোজাম্মেল হক, মাহমুদ হাসান, কামরুজ্জামান শিকদার, নুরুল ইসলাম, আব্দুস সাদেক, মো. হেলাল মজিদ, আব্দুল কাদের, মো. গুলজার হোসেন, মেসবাহউদ্দিন চৌধুরী, মো. নাজিমউদ্দিন, মো. এনামুল হক, আবুল বাশার ভূইয়া, মো. আব্দুর রহমান, মোজাম্মেল হক, এমএ হাসান, আশরাফ চৌধুরী, এ কাদের, শামসুল আলম চৌধুরী, নাজমুল হক, জাহিদ হাসান, প্রাণগোপাল কুন্ডু।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবুল, জাফরউল্লাহ, সাহাবউদ্দিন চৌধুরী লিটন, আরিফুল ইসলাম, এটিএম মাসুদ, নুরুল আবসার, প্রিন্স মুরাদ, রিদোয়ান বারি ও কামাল হোসেন মিঠু। কমিউনিটি নেতাদের মধ্যে ছিলেন মোর্শেদ আলম, সালেহা মোর্শেদ, সায়েরা হক, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মোর্শেদা জামান, আশরাফুজ্জামান, খোরশেদ খন্দকার, দাউদ ভূইয়া, সালেহ শফিক গেন্দা, খন্দকার আবু মুরাদ, ভিক্টর এলাহি লিয়াকত, জাকির হোসেন বাচ্চু, ওসমান চৌধুরী, আবু তাহের, ফরিদ আলম, আলিম খান আকাশ, নুরুন্নাহার নিশা, টিপু সুলতান, মামুন রশিদ।