লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর জেলায় গেল কয়েক দিনের অস্বাভাবিক বৃষ্টি এবং মেঘনা নদীর তীব্র জোয়ার ও উজানের পানিতে বন্যায় বিপর্যস্ত এখন জেলাবাসী। প্লাবিত হয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম। এতে করে জেলার পাঁচটি উপজেলার চার লাখেরও বেশি মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
গতকাল শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যার পর থেকে আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি না থাকলেও পানি বেড়ে ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চল, এতে রাস্তা ঘাট, কৃষকের ফসল, মানুষের বসতঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ডুবে ভেসে গেছে পুকুর ও জলাশয়ের মাছ। চারদিকে থৈ থৈ করছে শুধু পানি আর পানি।
প্লাবিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কমলনগর, রামগতি, সদর ও রায়পুরের একাংশ। এসব এলাকায় প্রশাসন, বিএনপি, জামায়াতসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আশ্রিত দের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
এ দিকে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন জানান, বন্যায় আমন ধানের বীজ তলা প্রায় দুই হাজার হেক্টর, রোপা আমন ধান, আউশ ধান ও সবজি নষ্ট হয়েছে।
বন্যা পরবর্তী কৃষকদের জন্য বীজ সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে জেলায় প্রায় ২৫ হাজার পুকুর-জলাশয় ভেসে গেছে, এতে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।’
জেলার প্রশাসক সুরাইয়া জাহান জানান, বন্যার্তদের জন্য ১৮৫টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৬৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও প্লাবিত এলাকা গুলোর স্কুল-কলেজে আশ্রয় নিতে পারবে বলে জানান তিনি।
সুরাইয়া জাহান আরো জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের শুকনো খাদ্য বিতরণের নির্শেনা দেয়া হযেছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বর্তমানে প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য ইতিমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নগদ দশ লাখ টাকা ও ৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’