রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

জাল কাগজে ঋণের অর্থ আত্মসাতের মামলায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশি বাবা-ছেলে গ্রেফতার

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: ভুয়া কর রিটার্নসহ বেকার হওয়া শ্রমিকদের পুনর্বহালের জন্য প্যা চেক প্রটেকশন প্রোগ্রাম (পিপিপি) কর্মসূচিতে মিলিয়ন ডলারের অধিক হাতিয়ে নেয়ার মামলায় যুক্তরাষ্ট্রেওর নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনের দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফবিআই কর্তৃক ব্যাপক তদন্তের পর বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নূরুস সাফা (৬৫) ও তার ছেলে মইদুল সাফা (৩৪)।

ব্রুকলীন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এরিক গঞ্জালেজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়কে চাঙ্গা করার অভিপ্রায়ে পিপিপি লোন মঞ্জুর করা হয় খুবই সহজ শর্তে। সেই সুযোগ নিয়ে বাবা-ছেলের মালিকানাধীন রাহিল কন্ট্রাক্টিং ইনকের নামে পিপিপি লোনের আবেদন করা হয়। আবেদনের সঙ্গে জাল কাগজপত্র ছাড়াও কর রিটার্নের ভুয়া ডকুমেন্টও সাবমিট করা হয়। কর রিটার্নের জাল কাগজ বানানোর সময় কর প্রস্তুতকারির সইও জাল করা হয়েছিল বলে তদন্তে উদঘাটিত হয়। এরপর ফেডারেল গভর্নমেন্ট পিপিপি লোন হিসেবে দশ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭৭ ডলার ৫০ সেন্ট মঞ্জুর করে। এ অর্থ ঐ কন্সট্রাকশন ফার্মের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার পরই তা ব্যক্তিগত কাজে খরচ করা হয়।

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি জানান, ঋণের অর্থ ড্র করার পরই তারা নিউজার্সিতে ভুরহীস ও পাইন হীল এলাকায় পাঁচ বেডরুমের দুইটি বাড়ি কিনেছে মোট ৩৯ হাজার ৩৬৭০ ডলারে। একইসময় ২০২১ মডেলের একটি বিএমডব্লিউ এম৫ স্পোর্টস সিডান গাড়ি কেনার ডাউন প্যামেন্ট হিসেবে ৭১ হাজার ডলার দিয়েছেন।

তদন্তে আরো উদঘাটিত হয়েছে যে, ঋণের অবশিষ্ট অর্থ খরচ করা হয়েছে ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য। অর্থাৎ, পিপিপি লোনের অর্থ খরচ করার একটি শর্তও তারা পালন করেননি বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর বাবা-ছেলেকে ব্রুকলীন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডিনা ডগলাসের এজলাসে হাজির করা হলে উভয়কে জামিন দেয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ হচ্ছে আগামী ৩০ অক্টোবর। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুরি, জালিয়াতি ও ব্যবসায়ের ভূয়া কাগজপত্র সংরক্ষণের গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার সন্তান নুরুস সাফা এর আগে উত্তর আমেরিকাস্থ সন্দ্বীপ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন।

জানা গেছে, করোনাকালিন লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়ানোর অভিপ্রায়ে ফেডারেল সরকার পিপিপি ঋণ বরাদ্দ করেছিল। খুব সহজশর্তে এ লোন মঞ্জুর করা হয় বেকার হওয়া শ্রমিক/কর্মচারিদের বকেয়াসহ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ভাড়া/মর্টগেজ পরিশোধ করার জন্য। প্রয়োজনে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করাও যাবে। কিন্তু, নিউইয়র্ক অঞ্চলের বহু প্রবাসী জাল-কাগজ ও ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে পিপিপি ঋণ হিসেবে মোটা অংক ড্র করেছেন বলে এফবিআইনসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছে।

এর আগে মিশিগান, শিকাগো, ম্যারিল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়াতে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। নিউইয়র্ক সিটিতে একটি বেসমেন্টে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব দেখিয়ে বেশ কয়েক মিলিয়ন ডলারের পিপিপি ঋণ ড্র করার বিষয়েও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।