নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: আসন্ন চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনকের (চট্টগ্রাম সমিতি) নির্বাচন ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে নির্বাচনী আমেজ। এ নির্বাচনে তাহের-আরিফ প্যানেলের বিপরীতে শক্ত অবস্থানের জানান দিচ্ছে মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলও। নিজের ও প্যানেলের জয়ের ব্যাপারে শত ভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সভাপতি প্রার্থী মাকসুদুল হক চৌধুরী। নির্বাচিত হলে দ্বিধা-বিভক্তি কাটিয়ে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মাকসুদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু, সেটা যাতে প্রতিহিংসায় পরিণত না হয়। নির্বাচনে হার-জিত আছে। আমি হারি কিংবা জিতি, চট্টগ্রাম সমিতিতে ছিলাম, আছি থাকব। চট্টগ্রাম সমিতি আমাদের প্রাণের সংগঠন। উত্তর আমেরিকায় বেশিরভাগ সংগঠন নিউইয়র্কভিত্তিক হলেও চট্টগ্রাম সমিতি কানাডা থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত বিস্তৃত।’
তিনি বলেন, ‘আমার মূল লক্ষ্য হল চট্টগ্রাম সমিতিতে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা। সবাইকে নিয়ে সংগঠন করব। চট্টগ্রাম সমিতিতে বিগত সময়ে দেখা গেছে, নির্বাচনের ৫-৬ মাসের মধ্যে একটা আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। যে দ্বন্দ্ব থেকে পরে কমিটি বিভক্ত হয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম অচল হয়ে যায়। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে লক্ষ্যে কাজ করব।’
মাকসুদুল হক চৌধুরী আরো বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে যারা আমার বিপক্ষ প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন, তাদের সকলকে নিয়েই আমি সংগঠন করব। চট্টগ্রাম সমিতিতে সারা বছরে এক বার মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে মেজবান ও বনভোজন ছাড়া তেমন কোন কার্যক্রম হয় না। কিন্তু, একটু সদিচ্ছা থাকলে গতানুগতিক এ আয়োজনের বাইরেও অনেক সেবামূলক কাজ আমরা করতে পারি।’
বিগত কমিটিগুলোর নেতৃত্বের দুর্বলতার প্রসঙ্গ টেনে মাকসুদ আহমেদ বলেন, ‘করোনাকালীনও শুধুমাত্র দ্বিধা-বিভক্তি ও দুর্বল নেতৃত্বের কারণে চট্টগ্রাম সমিতি কোন উল্লেখযোগ্য কাজ দেখাতে পারেনি। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া কিছু মানুষকে কবর বরাদ্দ দেয়ার মধ্যেই চট্টগ্রাম সমিতির কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু, মানবিক বিপর্যয়ের ঐ সময়টাতে যোগ্য নেতৃত্ব থাকলে সর্বোচ্চ সেবামূলক কাজ করা যেত।’
নতুন প্রজন্মের জন্য একটি বাংলা স্কুল, একটি আইটি স্কুল, মাসে অন্তত এক দিন চট্টগ্রাম সমিতির ভবনে প্রবাসী বাঙালীদের জন্য কনস্যূলেট সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ধারাবাহিকভাবে কুইন্স, ব্রুকলিন, পেনসেলভেনিয়া, কানেকটিকাটে এ কনস্যূলেট সেবার আয়োজন করা হবে বলেও জানান মাকসুদ।
তিনি আরো বলেন, ‘আগামীতে ভাতৃত্ববোধ বজায় রেখে চট্টগ্রাম সমিতি নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। মাকসুদ-মাসুদ প্যানেল নির্বাচনে জয়ী হলে এ কমিটিতে কোন দ্বিধা-বিভক্তি থাকবে না।’
আমাদের মধ্য যদি কোন দ্বন্দ্ব হয়ও সেটা চার দেয়ালের বাইরে যাবে না, আমরা টেবিলেই তার সমাধান করব বলে দাবি করেন তিনি।
ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মাকসুদুল হক চোধুরী বলেন, ‘আমার কমিটির সঙ্গে সমিতির যে কোন সদস্যের ভিন্নমত থাকতেই পারে। সংগঠন একক সিদ্ধান্তে চলবে না। গণতান্ত্রিক উপায়ে সংগঠন পরিচালিত হবে। সংখ্যাগরিষ্টের মত যেদিকে থাকে, আমার কমিটি সে মতকেই প্রাধান্য দিবে। সেক্ষেত্রে আমার মত যদি বাস্তবায়ন না হয় তাতে আমার কোন কষ্ট থাকবে না। সভাপতি হিসেবে আমার কমিটির সংখ্যাগরিষ্ট যে মত দিবে, তা আমি বাস্তবায়ন করেতে বদ্ধপরিকর।’
বলে রাখা ভাল, আগামী ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মাকসুদ-মাসুদ ও তাহের-আরিফ দুটি প্যানেলে মোট ৩৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে সর্বমোট ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৮৯৪ জন। সাধারণ ভোটার দুই হাজার ৬৬৩ জন ও আজীবন সদস্য ২৩৩ জন।