লেবানন: দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর (ব্লু হেলমেট) সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বাহিনী। এতে দুইজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) এ হামলা চালানো হয়। সংবাদ আল জাজিরার।
হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। বিশেষ করে, জাতিসংঘের মিশনে অংশ নেয়া ইউরোপীয় দেশগুলো এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ইসরায়েল স্বীকার করেছে, তাদের সেনাবাহিনী ওই এলাকায় গুলি চালিয়েছে। তবে তাদের দাবি, হিজবুল্লাহর সশস্ত্র সদস্যরা জাতিসংঘের ঘাঁটির কাছে অবস্থান করছিল।
ইতালি ইসরায়েলের এ হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ইতালির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গুইদো ক্রোসেটো বলেছেন, ‘এ ধরনের হামলা শুধু একটি ভুল নয়, এটি সহ্য করার মত নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে যে কোন আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের কাছে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে ইতালি।’
লেবাননে জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ বাহিনী (ইউএনআইএফআইএল) নিশ্চিত করেছে, ইসরায়েলের একটি মেরকাভা ট্যাংক থেকে ছোড়া গোলা দক্ষিণ লেবাননের নাকুরায় তাদের সদর দপ্তরের একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে আঘাত হানে। এতে দুইজন ইন্দোনেশীয় শান্তিরক্ষী আহত হন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা এয়ছে। তবে, তাদের অবস্থা গুরুতর নয়।
ইন্দোনেশিয়ার জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত হাড়ি প্রাবোও এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইন ও শান্তিপ্রতিষ্ঠার মূল্যবোধের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এ হামলা প্রমাণ করে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের ঊর্ধ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।’
স্পেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনাটিকে ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে এবং এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এ দিকে, আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেছেন, ‘জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা অগ্রহণযোগ্য ও তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা প্রধান জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয় নিশ্চিত করেছেন, লেবাননে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে। পরিস্থিতির অবনতির কারণে ৩০০ শান্তিরক্ষীকে এরই মধ্যে বৃহত্তর ঘাঁটিতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং আরো ২০০ জনকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
ইউএনআইএফআইএল জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ লেবাননে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে বার বার সংঘর্ষবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে।
দক্ষিণ লেবাননে ইউএনআইএফআইএলের প্রায় দশ হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।