শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

নিউইয়র্কে ‘বিডস’-এর সেমিনার অনুষ্ঠিত

শনিবার, অক্টোবর ২৬, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: ‘ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীদের পাঠানো প্রত্যেকটি ডলার বাংলাদেশের সব ব্যাংকে নিরাপদ। মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার এ লক্ষ্যে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে।’

গেল ১৯ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ডেভেলপমেন্ট এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিডস) আয়োজিত সেমিনারে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এসব কথা বলেন।

সেমিনারে অংশ নেয়া বক্তারা জানান, ব্যাংক আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে পারলে প্রবাসীরা বিদেশে টাকা না রেখে বাংলাদেশে রাখবে। এ সময় তারা অবিলম্বে অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।

বিডস ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে ‘দ্যা ‍রুল অব নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশী’স (এনআরবি’এস) শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুহাম্মদ আবদুল মান্নান। প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখনে লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক শওকত আলী, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড ইউনিভর্সিটির সহকারী অধ্যাপক মির্জা গালিব্, এটর্নি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ও ‘বিডস’-র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ ইমরান হোসাইন আনসারী।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ইমরান আনসারী বলেন, ‘১৫ বছরে আওয়ামী সরকার ঋণ করেছে সাড়ে ১৫ লাখ কোটি টাকা। আর ১৫ বছরে পাঁচার করেছে ১৮ লাখ কোটি টাকা। আর এগুলো করা হয়েছে ব্যাংকগুলো দখল ও ডাকাতির মাধ্যমে এবং রাষ্ট্রীয় মদদে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুধু ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করেই বিগত স্বৈরাচারি সরকার থামেনি, বিগত সরকার ইসলামি ব্যাংকগুলোর মৌলিক ফিলোসোফিকে ধ্বংস করেছে। দেশে বড় বড় মেগা প্রজেক্টের নামের লুটপাটের এক অলিগার্ক সোসাইটি গড়ে তোলেছে।’

ইমরান আনসারী ‘বিডস’-এর পক্ষে দাবী জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ১৫ বছরে যেসব টাকা পাচার হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। যেসব ঋণ খেলাপি রয়েছে, তাদের বিচার আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি, তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংকের জিম্মাদারিতে আনতে হবে।

প্রবাসীদের সব ইনভেস্টমেন্ট নিরাপদ করতে ও উৎসাহিত করতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নেবার দাবী জানান তিনি।

মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ‘প্রবাসীরা শুধু নিজেদের সমৃদ্ধ করছেন না, তারা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ তিন ‘আর’’এর উপর নির্ভরশীল। রেডিমেট গার্মেন্টস, রেমিটেন্স, রুরাল ডেভেলপমেন্ট।’

তিনি প্রবাসীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘ব্যাংকিং চ্যানেলে যেসব রেমিটেন্স পাঠানো হবে, তার নিরাপত্তা বিধানে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। প্রবাসী বিনিয়োগ বান্ধব ব্যাকিং কার্যক্রম গড়ে তুলতে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শিগগরই কার্যকর উদ্যোগ নেবে।’

মোহাম্মদ আবদুল মান্নান আরো বলেন, ‘পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকগুলো কাজ করছে। ভঙ্গুর ব্যাংকিং সেক্টরকে শিগগিরই তাঁর স্বকীয়তায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’

এ জন্য সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানান।

শওকত আলী বলেন, ‘রেমিটেন্স পাঠানো নয়, বলুন প্রবাসীরা বিনিয়োগ পাঠাবে। কিভাবে পাঠাবে ও বিনিয়োগের নিরাপত্তা বিধানে ব্যাংকগুলোকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’

মির্জা গালিব বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর রাজনীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সুতরাং, আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার।’

এ জন্য সরকারকে সহযোগিতা ও সময় দিতে বাংলাদেশি সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘প্রবাসীরা বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু, প্রবাসীদের বিনিয়োগ বিভিন্ন কারণে ঝুঁকির মুখে পড়ে। এ জন্য সরকার ও ব্যাংকগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।’

এছাড়া সেমিনারে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সেমিনারটির ষ্পন্সর প্রতিষ্ঠান গুড হোম ব্যাবারেজ ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ উল্লাহ, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ওয়াজেদ এ খান, ‘প্লাসিড’-এর কর্ণধার কামাল, ব্যাংক এশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আতাউর রহমান।