চট্টগ্রাম: চাকরি ফিরিয়ে দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) চাকরিচ্যুত কর্মীরা। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে তিন শতাধিক কর্মী এই মানববন্ধনে অংশ নেন। এ সময় তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিয়োগ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। চাকরি ফিরিয়ে না দিলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা। একই সাথে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তারা।
গেল বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ৬৭২ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। ওই দিন এসব কর্মকর্তাকে ইমেইলের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতির ব্যাপারটি জানানো হয়। পরে ব্যাংকে উপস্থিত হওয়া কর্মীদের চাকরিচ্যুতিপত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কর্মীরা।
মানববন্ধনে তারা বলেন, ‘কোন নোটিশ ছাড়াই গেল বৃহস্পতিবার আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে প্রভিশন পিরিয়ড শেষ না হওয়ায় আমাদের চাকরিচ্যুত করতে নোটিশ দেওয়া হয়নি। তাদের এক নোটিশে আমাদের ৬৭২টি পরিবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের কাছে আবেদন আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নিন।’
অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘গেল তিন মাস সংকট থাকাকালে আমরা ব্যাংকে অমানবিক কষ্ট করেছি, যাতে ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ায়। আমরা সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত কাজ করেছি। অথচ, এক নোটিশে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’
অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার আকতারউন নবী বলেন, ‘আমরা সবাই অন্যান্য চাকরি থেকে ভাল ভবিষ্যতের আশায় চাকরি ছেড়ে এসেছি। এখন আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই প্রচার করছেন আমাদের নিয়োগ নাকি অবৈধ। অথচ, আমরা ব্যাংকের সব নিয়মকানুন মেনেই চাকরিতে জয়েন করেছি। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া পর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৩০ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে আমরা উত্তীর্ণ হয়েছি। আমরা আমাদের চাকরি ফেরত চাই। না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার মোহাম্মদ আরিফ, মো. মনজুর আলম হিরু, ইব্রাহিম নূর সাইমন সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।
মানববন্ধন শেষে তারা চট্টগ্রাম জেলার প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে তারা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হল চাকরিচ্যুত কর্মীদের অবিলম্বে পুনর্বহাল, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদকে এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের অন্যায় পুনরাবৃত্তি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়া প্রবর্তন করা।