ঢাকা: সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলোতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির আবেদন মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অনলাইনে গ্রহণ শুরু হয়েছে। এ ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত। থাকছে না মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ডিসেম্বরে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই ও ভর্তি অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৭-২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ভর্তি কার্যক্রম। প্রথম অপেক্ষমান (ওয়েটিং লিষ্ট) তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হবে ২২-২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হবে ২৬-৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ভর্তির আবেদন ফি ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। টেলিটকের মাধ্যমে এই ফি জমা দিতে হবে।’
https://gsa.teletalk.com.bd/ লিংক অনুসরণ করে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের জন্য আলাদাভাবে আবেদন করা যাবে। আবেদনের সময় সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে থানাভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে মহানগর এলাকা ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাওয়া যাবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী ছয় বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে, কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স পাঁচ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত হবে। পরবর্তী শ্রেণিতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেয়া যাবে।
অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয়ের নাম দিতে পারবে। তবে, ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুইটি পছন্দক্রম (দুইটি বিদ্যালয় পছন্দক্রম) সম্পাদন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অন্য দিকে, সরকারি-বেসরকারি কোন স্কুলেই একটি শ্রেণির কোন শাখাতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।
ঢাকা মহানগরীর বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে স্কুল সংলগ্ন ক্যাচমেট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতে হবে। বীর ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এক শতাংশ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জন্য দশ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা দুই শতাংশ, অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীর জমজ ও সহোদর ভাই-বোনেরা পাঁচ শতাংশ কোটায় সংরক্ষিত আসনে ভর্তি হতে পারবে। এত দিন মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য পাঁচ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার জন্য পাঁচ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এ কোটায় শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে এ আসনে ভর্তি করতে হবে।
ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ঢাকা মহানগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন সর্বোচ্চ তিনটি থানাকে ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ হিসেবে নির্ধারণ করতে পারবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়া থেকে শূন্য আসনের ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী নেওয়া হবে। ক্যাচমেন্ট এরিয়ার এ কোটা সুবিধা পেতে অনলাইনে আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্বাচন করতে হবে।
দেশের মফস্বল এলাকার স্কুলে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে ৫০০ টাকার বেশি হবে না। উপজেলা ও পৌর এলাকায় এক হাজার টাকা, মহানগর এলাকায় (ঢাকা ছাড়া) সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা।
অন্য দিকে, রাজধানীর এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নিতে পারবে পাঁচ হাজার টাকা। আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভর্তি ফি নিতে পারবে আট হাজার টাকা। তবে, ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফি দশ হাজার টাকা।
মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়, ‘রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি তিন হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে, পুন:ভর্তি ফি নেওয়া যাবে না।’