ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নতুন প্রশাসনের অর্থমন্ত্রী পদে স্কট বেসেন্টকে মনোনয়ন দিয়েছেন। সংবাদ এএফপির।
স্কট বেসেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের করনীতি, সরকারি ঋণ, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ও নিষেধাজ্ঞার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলিতে নেতৃত্ব দেবেন।
বেসেন্ট স্কয়ার গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকে কর হ্রাসের মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি আধিপত্য পুনরুদ্ধার করতে চান এবং বিশ্বাস করেন যে, বাজেট ঘাটতি মোকাবেলা করা প্রয়োজন।
স্কট বেসেন্ট ওয়াল স্ট্রিটের স্বনামধন্য বিনিয়োগকারী। এক সময় তিনি হাঙ্গেরিয়ান-মার্কিন ব্যবসায়ী ও ধনকুবের জর্জ সরোসের জন্য কাজ করেছেন। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার কাজের শুরু থেকেই ট্রাম্পকে সমর্থন জুগিয়েছেন তিনি।
প্রচারের সময় ট্রাম্পের প্রশংসা করে স্কট বেসেন্ট ভোটারদের বলেছিলেন, ‘নতুন একটি স্বর্ণযুগের সূচনা করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তা হবে নিয়ন্ত্রণমুক্ত, কম দামের জ্বালানির ও নিম্ন করের।’
ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ফেডারেল ফাইন্যান্স থেকে শুরু করে ব্যাংক তত্ত্বাবধান পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্র এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাও তদারকি করে।
বেসেন্ট সাম্প্রতিক সময়ে প্রবৃদ্ধির জন্য কর সংস্কার ও নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী পদে স্কট বেসেন্টের নাম ঘোষণা করে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) নিজের সোশ্যাল ট্রুথে দেয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী এবং ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশলবিদ হিসেবে স্কটকে ব্যাপক সম্মান করা হয়।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তিনি (স্কট) আমেরিকা ফার্স্ট এজেন্ডার দীর্ঘ দিনের সমর্থক। আমার নীতিগুলো সমর্থন করার মধ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবকে এগিয়ে নেবেন এবং অন্যায্য বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা রোধ করবেন।’
ট্রাম্প বলেন, ‘বিশ্বের নেতৃস্থানীয় অর্থনীতি হিসাবে আমাদের অবস্থানকে মজবুত করার প্রয়াসে তিনি আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি নতুন স্বর্ণযুগের সূচনা করতে সাহায্য করবেন।’
তিনি বলেন, ‘বেসেন্ট ‘বেসরকারি খাতকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং ফেডারেল ঋণের অ-টেকসই পথ বন্ধ করতে সহায়তা করবেন।’
বেসেন্ট দক্ষিণ ক্যারোলিনার বাসিন্দা। তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং বিলিয়নেয়ার জর্জ সোরোসের সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিনিয়োগ সংস্থা সোরোস ফান্ড ম্যানেজমেন্টের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করেছেন।
তিনি ২০১৫ সালে তার নিজস্ব হেজ ফান্ড শুরু করেন। এ জন্য তিনি সোরোস থেকে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ মূলধন সংগ্রহ করেন।
বেসেন্ট সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘তিনি ৩০ বছর ধরে ট্রাম্প পরিবারকে চেনেন এবং নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ভাইয়ের সাথে বন্ধুত্ব করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলাম। ওয়াল স্ট্রিটের যে কয়েকজন লোক তাকে সমর্থন করেছিল, আমি তাদের একজন।’
বেসেন্ট যোগ করেছেন যে, ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় থাকা মানে ‘আপনার কাজ হল ডোনাল্ড ট্রাম্প যা করতে চান তা করা’ এবং তার নীতিগুলো বাস্তবায়নের কার্যকর উপায় খুঁজে বের করা।’
বেসেন্ট প্রধানত তার স্বামী ও দুই সন্তানের সাথে দক্ষিণ ক্যারোলিনায় বসবাস করেন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ট্রাম্প তার প্রশাসনের মূল মনোনয়ন সম্পর্কে বেশ কিছু ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি রাসেল ভাটকে ম্যানেজমেন্ট ও বাজেটের অফিসে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বাছাই করেছেন, তাকে রিপাবলিকানদের প্রথম প্রশাসনে যে ভূমিকায় অধিষ্ঠিত করেছিলেন, সেই ভূমিকায় ফিরিয়ে দেন এবং ওরেগনের কংগ্রেস মহিলা লরি শ্যাভেজ-ডিরেমারকে তার নতুন শ্রমমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন।
ট্রাম্প দেশটির সার্জন জেনারেল, সাবেক কংগ্রেসম্যান ও ডাক্তার ডেভ ওয়েলডনকে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের প্রধান এবং মার্টি মাকারিকে খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের প্রধান হিসাবে মনোনীত করেছেন।
সাবেক এনএফএল প্লেয়ার স্কট টার্নারকে আবাসন ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী হিসাবে বাছাই করা হয়েছে।