ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নিবেন। গেল ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলীয় প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, হোয়াইট হাউসে প্রবেশের পর তার প্রথম দিনের প্রথম কাজই হবে চীন ও প্রতিবেশি কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা কানাডা ও মেক্সিকোর সব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত করারোপের নির্বাহী আদেশে সই করবেন। সংবাদ ফক্স নিউজের।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ট্রাম্পের এই ঘোষণা দেয়ার পরপরই বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পাশাপাশি, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালান বন্ধে ব্যর্থতার জন্যও তিনি প্রতিবেশি দুই দেশ ও চীনকে আচ্ছামত তুলোধুনা করেছেন।
একই দিন তিনি তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা বার্তায় বলেছেন, ‘কানাডা ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিকৃত সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের নির্বাহী আদেশে সই করার পাশাপাশি যতক্ষণ না পর্যন্ত বেইজিং ফেনটানিল মাদক চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে,ততক্ষণ পর্যন্ত চীনের ওপর আরো অতিরিক্ত দশ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর শীর্ষ স্থানীয় আমদানিকারক দেশ। আমেরিকানরা নিজেদের প্রয়োজনীয় ৪০ শতাংশ পণ্যই আমদানি করে চীন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে। আমদানিকৃত পণ্যের দাম বছরে দাঁড়ায় তিন হাজার ২০০ বিলিয়ন মাকিন ডলার।
ট্রাম্প কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণায় বহু বার চীনের বিরুদ্ধে কঠোর শুল্কারোপের কথা উচ্চারণ করেছেন। এই কারণে চীনের ওপর শুল্কারোপের হুমকিতে নতুন করে তেমন কোন বিস্ময় ছিল না। তবে, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর আচানক শুল্কারোপের ট্রাম্পের ঘোষণায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এর কারণ হচ্ছে সীমান্তবর্তী দেশ দুটিকে যুক্তরাষ্ট্র যুগ যুগ ধরে নিজেদের সবচেয়ে ঘনিষ্ট মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।
রাজনীতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ‘শুধু বাণিজ্যিক কারণেই নয়, রাজনীতি ও কটুনৈতিক ক্ষেত্রেও অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট সহযোগি হিসেবে পরিচিত। তাই, ঘণিষ্ট দুই প্রতিবেশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আচানক শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা রাজনৈতিক ও কুটনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠেছে।
শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণার প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক শেয়ার মার্কেটেও। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ইউরোপীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম কমেছে। জার্মানির ভোকসওয়াগন গ্রুপের শেয়ারের দাম কমেছে দুই দশমিক ২৬ শতাংশ। অপর দিকে, স্টেলাস্টিসের শেয়ারের দাম কমেছে চার দশমিক ৫৪ শতাংশ।