মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান: আজিমুশ্মান মাহে রমাযান বিশ্ব মুসলিম মিল্লাতের অত্যন্ত সন্নিকটে। আর মাত্র কয়েক দিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমাযান। ইতিমধ্যেই বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় রমাযানকে স্বাগত জানাতে যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। মুসলিম উম্মাহ অধীর অপেক্ষায় রয়েছে রমাযানের চাঁদ উদয় হওয়ার। আল্লাহর নেককার বান্দাহ বান্দীগণ সারা বছরই মাহে রমাযানের অপেক্ষা করতে থাকে।
বিশেষ করে তারা শা’বান মাস আসার সাথে সাথেই দুনিয়াবি কাজকর্ম গুছিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে মাহে রমাযানের আগমনের।
রমাযান মাস কোনো উৎসবের মাস নয়, বরং রোযা রাখার মাধ্যমে তাক্বওয়া অর্জন ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাস রমযান। রুহকে কলুষমুক্ত করার মাস রমযান।
রমাযান আরবি শব্দ ‘রময’ ধাতু থেকে এর উৎপত্তি। অর্থ দহন করা, ঝলসে দেওয়া। দীর্ঘ এক মাস রোযা রাখার মাধ্যমে রোযাদারের সব পাপ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মুমিনের হৃদয়ে উজ্জ্বলতা আসে, আত্মার কালিমা ধুয়ে মুছে পবিত্র হয়ে যায়। এ জন্যই এ মাসকে রমাযান রাখা হয়েছে। রমাযানকে রমাযান হিসেবে নাম রাখার কারণ সম্পর্কে হযরত আনাস (রা.) হুজুর (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রমাযানকে রমাযান নাম রাখার কারণ হলো যে, রমাযান গোনাহকে জ্বালিয়ে দেয়।
মহাগ্রন্থ কুরআন শরীফে সাওম বা সিয়াম শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ বিরত থাকা। রোযা শব্দটি মূলত ফার্সী, আরবি সাওম শব্দের প্রতিশব্দ রুপেই উর্দু ও বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়। শরিয়তের পরিভাষায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়ত সহকারে পানাহার এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম বা রোযা বলা হয়।
রোযার বিধান সম্পর্কে আল্লাহ কুরআন শরীফে বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার। (সুরা বাক্বারা, আয়াত ১৮৩)।
অতএব, আসুন, রমাযানে রোযা রাখার জন্য এখন থেকেই শারীরিক মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করি। রমাযানের পূর্বেই সব প্রকার গোনাহ থেকে তাওবা করে পূতপবিত্র অবস্থায় রমাযানের রোযা রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মনোনিবেশ করি।
লেখক: মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
পরিচালক
ফখরে বাঙ্গাল ইসলামিয়া মাদরাসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া