ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফ্লোরিডায় বসবাসরত উত্তর আমেরিকা প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি ও ৩৯তম আটলান্টা ফোবানার মিডিয়া চেয়ারম্যান গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জুয়েল সাদতের মাতা বেগম মুহিবুব নাহার ( ৮৬) গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বার্ধক্যজনিত কারণে ওরলান্ডোতে মৃত্যুবরন করেছেন।
বেগম মুহিবুন নাহার ১৯৩৮ সালে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাসিমপুর গ্রামে এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তৎকালীন সমাজ জীবনে মেয়েরা স্কুলে পড়তে না গেলেও তিনি লেখাপড়া করেন। তিনি অনেকটা ব্যক্তিগত আগ্রহেই স্কুলে যেতেন। দুই ভাইয়ের সাথে তিনি লুকিয়ে স্কুলে যেতেন৷ সংবাদপত্রের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। বেগম মুহিবুন পত্রিকা নিয়মিত পড়তেন। চার মেয়ে ও দুই ছেলেদের ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর জন্য ১৯৬৭ সালে মৌলভীবাজার জেলা থেকে সিলেট শহরে স্থানান্তরিত হন। মালিনীছড়া চা বাগানে তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় ছিলেন। তিনি সুচি শিল্পে দক্ষ ছিলেন। তিনি ৮০’-এর দশকে অনেককে সেলাই শিক্ষা দিয়েছিলেন।
পড়াশুনার প্রতি অসম্ভব মনোবল থাকায় তিনি নিজের সন্তান ছাড়াও পরিবারের অনেককে উচ্চ শিক্ষার জন্য সহযোগিতা করেন। ৯৩ সাল থেকে ফ্লোরিডার কিসিমিতে আসবাস করতেন, অসম্ভব অমায়িক ও মানবিক গুণাবলীর কারণে তিনি কমিউনিটির সকলের নিকট প্রিয় ছিলেন৷
বেগম মুহিবুন নাহারের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
মরহুমার নামাজে জানাজাতে কয়েক শত গুণগ্রাহী উপস্থিত হন৷
শহরের বড় বড় ৫টি মসজিদের ইমামসহ বিশিষ্ট আলেম উলামা ও ইসলামি স্কলাররা নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
বেগম মুহিবুন নাহার নানা জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন৷ তিনি সাদত ফাউন্ডেশনের একজন ট্রাস্টি। সাদত ফাউন্ডেশনের আওতাধীন মাদরাসাগুলেতে ১৩০ জন হাফিজী পড়ছেন এবং ৩০ জন হাফিজী সম্পন্ন করেছেন।
মরহুমার মৃত্যুর সংবাদে সিলেটে ও লন্ডনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
তার মৃত্যুতে সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা মহানগর আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ সমিতি, বাংলাদেশ সোসাইটি, দৈনিক রুপালি বাংলাদেশ, ফোবানা, বাংলাদেশ গ্রীন ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সিলেট চট্টগ্রাম ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি, দৈনিক আমাদের প্রতিদিন, বাংলাধারা শোক প্রকাশ করেছে।
মরহুমার দুই মেয়ের পরিবারের চারজন কোরআনে হাফিজ৷
মৃত্যুকালে তিনি চার কন্যা, দুই পুত্র ও অসংখ্য নাতি-নাতনিসহ আত্মীয় স্বজন রেখে যান। শুক্রবার বিকালে কিসিমির মুসলিম সিমেট্রিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হন মুহিবুন নাহার।