ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: সামরিক সহায়তা স্থগিতের পর এবার ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক জন র্যাটক্লিফ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি বন্ধ করে দিয়েছে।’ এর ফলে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা আহ্বানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহযোগিতা করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
এর ফলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং প্রাণহানি বেড়ে যেতে পারে। চলতি সপ্তাহে কিয়েভকে মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার পরপরই এই স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।
এর আগে ইউক্রেনকে সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের চাপ কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘জেলেনস্কির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন যেখানে ইউক্রেনীয় নেতা বলেছেন যে, তিনি আলোচনার টেবিলে আসতে ইচ্ছুক।’
তবে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান আংশিক নাকি পুরোপুরি স্থগিত করা হয়েছে এবং ক তদিন তা বহাল থাকবে, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিকে আলোচনা ভালো ভাবেই চলছিল। কিন্তু পরবর্তী তারা দুইজন বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরপরেই ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল নিয়ে হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করেন জেলেনস্কি।
এই ঘটনার কয়েক দিন পরেই কিয়েভের জন্য সামরিক সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ‘তিনি দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শক্তিশালী নেতৃত্বে’ কাজ করতে প্রস্তুত।’
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। হোয়াইট হাউজের ‘বাগবিতণ্ডার’ ঘটনাকে দুঃখজনক বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে পরিস্থিতি ঠিক করার। কারণ ট্রাম্প তখন অভিযোগ করেছিলেন যে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত ছিলেন না জেলেনস্কি। ইউক্রেনের এই নেতা যুদ্ধ শেষ করার প্রাথমিক কিছু ধাপের কথাও তুলে ধরেন।’
দ্রুত যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত বলে উল্লেখ করে ভলোদিমির জেলেনস্কি লিখেছেন, আমরা দ্রুত যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত এবং প্রথম ধাপে যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি ও আকাশে যুদ্ধবিরতি- ক্ষেপণাস্ত্র, দূরপাল্লার ড্রোন, জ্বালানি ও অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা নিষিদ্ধ করা এবং সমুদ্রে যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে কার্যকর করা যেতে পারে যদি রাশিয়াও একই পদক্ষেপ নেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমরা দ্রুত পরবর্তী ধাপগুলো শেষ করতে চাই এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে একটি শক্তিশালী চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে কাজ করতে চাই।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, ‘শুক্রবারের (২৮ মার্চ) ওই বৈঠকটি যেমন হওয়ার কথা ছিল তেমন হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে, বিষয়টি এভাবে ঘটে গেছে। এখন সময় এসেছে পরিস্থিতি ঠিক করার। আমরা চাই ভবিষ্যতে সহযোগিতা ও যোগাযোগ আরও গঠনমূলক হোক।’