এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত কর ও ব্যয় বিল নিয়ে এবার প্রকাশ্যে তীব্র সমালোচনা করলেন প্রযুক্তি ধনকুবের ইলন মাস্ক। এটিকে তিনি ‘জঘন্যতম বিল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যকার দূরত্ব আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া একাধিক পোস্টে মাস্ক বলেন, এই জঘন্য বিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি ভয়াবহভাবে বাড়িয়ে তুলবে ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর ‘অসহনীয় ঋণের বোঝা’ চাপিয়ে দেবে । তার ভাষ্য অনুযায়ী, বিলটি কার্যকর হলে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারে।
গত মাসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে এই বিতর্কিত বিলটি পাস হয়েছে। ট্রাম্প ও কংগ্রেসের রিপাবলিকানরা আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে বিলটি আইনে পরিণত করতে চান। এতে বড় করছাড়, ব্যাপক প্রতিরক্ষা খরচ ও অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এটি বর্তমানে সিনেটে বিবেচনাধীন। ট্রাম্প এই বিলকে নিজের দ্বিতীয় মেয়াদের কেন্দ্রীয় নীতি হিসেবে দেখছেন। মাস্ক এক্সে লেখেন, যারা এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। একই সঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দেন, আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তিনি এসব রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে প্রচারে নামতে পারেন।
এই সমালোচনা মাস্কের প্রথম প্রকাশ্য ট্রাম্প-বিরোধী মন্তব্য, যা এসেছে সরকারি দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার পর। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই)’ নামে নবগঠিত একটি সংস্থায় ১২৯ দিন কাজ করেছিলেন, যার কাজ ছিল সরকারের ব্যয় হ্রাস করা। গত ৩১ মে তিনি দায়িত্ব ছাড়েন। যদিও ট্রাম্প বলেছিলেন, ইলন সব সময় আমাদের পাশে থাকবে।
এদিকে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট মাস্কের বক্তব্য নিয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট জানেন ইলন এই বিলে কী অবস্থানে ছিলেন। তবে এটি একটি বড় ও দারুণ বিল। প্রেসিডেন্ট এতে অনড়। এই বিলের মাধ্যমে ২০১৭ সালের ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে পাস হওয়া করছাড় পুনর্ব্যবহার করা হবে। একই সঙ্গে ঋণের সীমা ৪ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানো হবে, যা নিয়ে আর্থিক রক্ষণশীলরা উদ্বিগ্ন।
মাস্কের এই মন্তব্য রিপাবলিকানদের মধ্যকার দ্বন্দ্বকে আরও উন্মোচিত করেছে। সিনেটেও এখন বিলটি ঘিরে মতবিরোধ তীব্র আকার নিচ্ছে। কেনটাকির সিনেটর র্যান্ড পল বলছেন, ঋণসীমা বাড়ানো হলে তিনি এর পক্ষে ভোট দেবেন না। তিনি বলেন, এই বিল পাস হলে ঋণের দায় পুরোপুরি রিপাবলিকানদের ঘাড়ে বর্তাবে। ট্রাম্প পালটা জবাবে র্যান্ড পলকে কটাক্ষ করে বলেন, এই বিল সম্পর্কে তার কিছুই বোঝার ক্ষমতা নেই। তিনি আরও দাবি করেন, কেন্টাকির মানুষ তাকে সহ্য করতে পারে না।