নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: ছুরিকাঘাতে আহত হবার এক দিন পর শনিবার (১৩ আগস্ট) কথা বলেছেন লেখক সালমান রুশদি। নিউইয়র্ক রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে চৌতাউকোয়া ইনস্টিটিউশনে শৈল্পিক স্বাধীনতা নিয়ে বক্তব্য দেয়ার আগে তিনি ছুরিকাহত হন। খবর ভয়েস অফ আমেরিকার।
চৌতাউকোয়া ইনস্টিটিউশনের প্রেসিডেন্ট মাইকেল হিল শনিবার (১৩ আগস্ট) গভীর রাতে টুইট করে এ খবর জানান।
হামলার পর লেখক সালমান রুশদিকে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর চিকিৎসকরা তাকে ভেন্টিলেশনে রাখেন।
১৯৮৮ সালে রুশদির ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটি প্রকাশের পর, তার মাথার জন্য মূল্য ঘোষণা করা হলে তিনি ঝুঁকি নিয়ে জীবন যাপন করছিলেন।
রুশদিকে আক্রমণ করার অভিযোগে আটক হাদি মাতারের বিরুদ্ধে শনিবার (১৩ আগস্ট) পর্যন্ত হত্যা চেষ্টা ও হামলার অভিযোগ করা হয়নি। তাকে জামিন ছাড়াই আটকে রাখা হয়েছে। আর হামলার উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়।
‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর, সে সময়ের ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি, রুশদি ও বইটির প্রকাশনার সাথে জড়িত যে কাউকে হত্যা করার ফতোয়া জারি করেছিলেন। বইটিতে ইসলামকে অপমানজনকভাবে উপস্থাপন করার অভিযোগে এ ফতোয়া জারি করা হয়।
ফতোয়া একটি ইসলাম-ধর্মীয় আদেশ। খোমেনি মারা গেলেও ফতোয়াটি এখনো কার্যকর রয়েছে।
ফতোয়া জারির পর প্রায় নয় বছর ধরে রুশদি নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেছিলেন। এরপর থেকে তিনি আরো বেশি উদার জীবন যাপন শুরু করেন।
ছুরিকাঘাতে ৭৫ বছর বয়সী এ লেখকের যকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও একটি বাহু্র স্নায়ু কেটে গেছে। রুশদির এজেন্ট অ্যানড্রু ওয়াইলি শুক্রবার (১২ আগস্ট) বলেন, ‘রুশদির তার একটি আহত চোখ হারাতে পারেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সালমান রুশদি, যার রয়েছে মানবতার প্রতি তার অন্তর্দৃষ্টি, গল্পের প্রতি রয়েছে অতুলনীয় অনুভূতি ও ভয় নিয়ে চুপ করে থাকতে অস্বীকার করেন, তিনি একটি অপরিহার্য, সার্বজনীন আদর্শের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তিনি দাঁড়িয়েছেন সত্য, সাহস, সহনশীলতা ও ভয় ছাড়াই মত প্রকাশের ক্ষমতার পক্ষে। এগুলো কোন মুক্ত ও উদার সমাজ তৈরির উপাদান।’
লেখকের উপর এ আক্রমণ চৌতাউকোয়া ইনস্টিটিউশনের নিরাপত্তা প্রোটোকলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
প্রতিষ্ঠানটি শনিবার (১৩ আগস্ট) বলেছে যে, তারা নতুন ও আরো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে।