রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

সোলেদারের নিয়ন্ত্রণ দাবি রাশিয়ার, ইউক্রেন বলছে যুদ্ধ চলছে

শনিবার, জানুয়ারী ১৪, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ক্রামাটর্কস, ইউক্রেন: রাশিয়া শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বলেছে, তাদের বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত শহর সোলেদারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এটি কয়েক মাস যুদ্ধক্ষেত্রে বিপর্যয়ের মধ্যে বিজয়ের প্রথম দাবি। কিন্তু ইউক্রেন বলেছে যে, ভয়ঙ্কর যুদ্ধ এখনো চলছে। খবর এএফপির।

উভয় পক্ষই লবণ খনির ফাঁড়ির জন্য যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতি স্বীকার করেছে। মস্কো বার বার অপমানিত হওয়ার পরে ঘরে ফিরে যে কোন জয় বিক্রি করতে মরিয়া ও ইউক্রেন ভূমি ধরে রাখতে ও জয় ফিরে পেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় এর আগের দিন ঘোষণা করেছে যে, সোলেদারের ‘মুক্তি সম্পন্ন করেছে’ এবং এ বিজয় দোনেৎস্ক অঞ্চলে আরো ‘সফল আক্রমণাত্মক অভিযানের’ পথ প্রশস্ত করবে।

একটি পৃথক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘এটি সোলেদারকে আঘাত করার জন্য ভাড়াটে গ্রুপ ওয়াগনারের ‘সাহসী ও নিঃস্বার্থ’ বাহিনীর প্রশংসা করেছে।’

ওয়াগনার ও সরকারী সামরিক বাহিনীর মধ্যে অন্তর্দ্বদ্ধ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আলোচনার পরে এ সম্মতিটি বিতর্কিত শক্তির একটি অস্বাভাবিক স্বীকৃতি ছিল।

ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন জোর দিয়ে বলেছেন যে, তার বাহিনী সোলেদারের পক্ষে আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছে।

কিয়েভ রাশিয়ার ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, সোলেদারে ‘প্রচন্ড যুদ্ধ’ চলছে। এটি একটি শিল্প শহর যেখানে যুদ্ধ-পূর্ববর্তী জনসংখ্যা ছিল প্রায় দশ হাজার এখন শহরটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গান্না মালিয়ার এর আগে বলেছিলেন যে, সোলেদারকে ঘেরাও করার জন্য রাশিয়া তার বেশিরভাগ বাহিনী দোনেস্কের চারপাশে মোতায়েন করেছে। ‘এটি যুদ্ধের একটি কঠিন পর্যায়’।

সোলেদারের উত্তরে অবস্থিত একটি শহর সিভর্স্কে, যা রাশিয়ার অগ্রযাত্রার জন্য পরবর্তী সারিতে রয়েছে। কামানগুলো বিধ্বস্ত ভবনগুলোর চারপাশে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল; যেখানে কিছু অবশিষ্ট বাসিন্দা ও ইউক্রেনীয় সামরিক সদস্যরা হালকা তুষার ও হিমশীতল বাতাসে সাহসের সাথে যুদ্ধ করছে।

আলেক্সান্ডার সিরেঙ্কো, যিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত ফ্ল্যাট থেকে জানালার ফ্রেম ও মেঝে কেটে ছোট ছোট টুকরো করে বেসমেন্টে সংরক্ষণ করছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে, তিনি চান না কিয়েভের সেনারা পিছু হটুক।

তিনি বলেছেন, ‘আপনি জানেন, আমি আমার জীবনে অনেক ভীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি।’ ‘আমরা শুধু আশা করি, তারা পিছু হটবে না। আমরা আশা করি, আমরা আশা করি। আমরা ভীত, কিন্তু আমরা কোথায় যাব?’

সোলেদারের দখল রাশিয়ান বাহিনীর অবস্থানের উন্নতি করতে পারে। কারণ, তারা অক্টোবর থেকে তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু বাখমুতের নিকটবর্তী পরিবহন ক্রসরোডের দিকে অভিযান চালানো।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বলেছে, ‘সোলেদারের দখলের ফলে সেখানে ‘ইউক্রেনীয় সেনাদের সরবরাহ রুট বন্ধ করা’ ও তাদের ঘিরে ফেলা সম্ভব হয়েছে।’

ইউএস-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার বলেছে, ‘অভিযান নিয়ে রাশিয়া সোলেদারের গুরুত্বকে ‘অতিরিক্ত’ বাড়িয়ে প্রচার করছে।’

‘কিন্তু এ ছোট আকারের বিজয়ে বাখমুতের আসন্ন অবরোধের পূর্বাভাস দেয়ার সম্ভাবনা কম’ উল্লেখ করে সংস্থাটি এ বিষয় সতর্ক করে দিয়েছে।

এটি বলেছে যে, সোলেদারের যুদ্ধ সম্ভবত রাশিয়ান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি তাদের সক্ষমতা পঙ্গু করে দিয়েছে। এতে দ্রুত দক্ষিণে বৃহত্তর বাখমুতে অভিযান বাধাগ্রস্ত হবে।