ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: ফের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর বাতিল করা হয়েছিল। খবর ডয়চে ভেলের।
নির্বাচনে হেরেও হার স্বীকার করার পাত্র নন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ক্যাপিটল হিলে তার উগ্র সমর্থকদের জনরোষে কতটা ইন্ধন জুগিয়েছিলেন, তা নিয়ে এখনো সংসদীয় তদন্ত চলছে। অ্যামেরিকার জন্য কঠিন সেই সময়ে চরম বিতর্কিত বক্তব্য ও আচরণের কারণে ট্রাম্প টুইটার, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন।
ইলন মাস্ক টুইটারের মালিকানা পাওয়ার পর নভেম্বর মাসে ট্রাম্প তার একাউন্ট ফিরে পেয়েছেন। এবার মেটা কোম্পানিও তার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট ফের চালু করার ছাড়পত্র দিল। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে কোম্পানি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের আইনজীবী স্কট গ্যাস্ট গত সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য মেটা কোম্পানিকে চিঠি লিখেছিলেন।
গত বছরের নভেম্বর মাসেই ট্রাম্প ২০২৪ সালে ফের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য যুদ্ধের ঘোষণা করেছেন। রিপাব্লিকান দল যদি সত্যি তাকে ফের সেই সুযোগ দেয়, তাহলে তার ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। সাসপেন্সনের আগে ফেসবুকে তার প্রায় তিন কোটি ৪০ লাখ ও ইনস্টাগ্রামে দুই কোটি ৩০ লাখ ফলোয়ার ছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মঞ্চ হারানোর পর ট্রাম্প নিজেই ‘ট্রুথ সোশাল’ নামের এক মঞ্চ গড়ে তুলে সেখানেই নিজের বক্তব্য রেখে চলেছেন। নভেম্বর মাসে ফের টুইটারে ফেরার সুযোগ পেলেও তিনি এখনো সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন নি। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ফেরার সুযোগ সম্পর্কে তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো জানা যায় নি।
তবে তার প্রচার অভিযানের মুখপাত্র ফক্স নিউজ নেটওয়ার্ককে বলেছেন, ‘২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ফেসবুক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক হাতিয়ার হবে।’
ট্রাম্প নিজে ‘ট্রুথ সোশাল’ মঞ্চে বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কোন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের সাথে এমন আচরণ আর কখনো হওয়া উচিত নয়।’
শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প এ দুই মঞ্চে ফিরে ফের যদি বিতর্কিত মন্তব্য করে মুক্ত চিন্তার সীমা লঙ্ঘন করেন, সে ক্ষেত্রে মেটা কোম্পানি কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পোস্ট সরানো থেকে শুরু করে এক মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত একাউন্ট সাসপেন্ড করা হতে পারে।
সমালোচকরা অবশ্য মেটা কোম্পানির এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন। অনেক নাগরিক অধিকার কর্মীর মতে, কাগজেকলমে নীতিমালা থাকলেও বাস্তবে সেগুলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর ফের হামলা ঘটলে ফেসবুক তা আগেভাগে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে কিনা, সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠছে।
অন্য দিকে, মুক্ত চিন্তার প্রবক্তারা সব সম্ভাব্য প্রার্থীর বক্তব্য শোনার গুরুত্ব তুলে ধরে এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছেন।