ঢাকা: সম্প্রতি শুটিং স্পটে বিস্ফোরণে দগ্ধ অভিনেত্রী শারমিন আঁখি বলেছেন, ‘ঘটনার পর নানাভাবে কুৎসা রটানো হচ্ছিল, আমি ওয়াশরুমে ধূমপান করার সময় সেখানে বিস্ফোরণ হয়। যেটা একদমই সত্য নয়। সেখানে জমে থাকা কোন গ্যাস থেকেই এ বিস্ফোরণ হতে পারে।’
ঘটনাটি পরিকল্পিত কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সে রকম কিছু মনে করছি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে এটি একটি দুর্ঘটনা।’
সে দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনো আমার সে দিনের ঘটনা বার বার চোখে ভেসে ওঠে। আমি যখন শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম; কস্টিউম পরার আগে ওয়াশরুমে যাই। সেখানে লাইট চালু করতেই চোখের সামনে বার বার অগ্নিকণা দেখি। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নীল আগুনের লাভার মত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে আমি হাত দিয়ে মুখ ঢাকি। তখন আমার হাতের চামড়া চটচট করে ফুটছিল। বিস্ফোরণে ওয়াশরুমের দরজা, ভেতরের সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। আমি ছিটকে বাইরে এসে পড়ি।’
চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে বাসায় ফেরার আগে সংবাদ সম্মেলন সে দিনের ঘটনার বর্ণনা দেন শারমিন আঁখি।
তিনি জানান, ‘চিকিৎসার অংশ হিসেবেই তাকে সূর্যের আলো, লাইট এড়িয়ে চলতে হবে। ঘরের পর্দা এমনভাবে লাগাতে হবে, যাতে ঘরে বাইরের আলো না ঢুকতে পারে। পুরো অন্ধকার জগতে থাকতে হবে ছয় মাস। এ অবস্থা জানার পর হাসপাতালের কেবিন থেকে বের হয়ে সূর্যের আলো গায়ে মেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন।’
শারমিন আঁখি বললেন, ‘আমার সামনের যুদ্ধটা আরো কঠিন। তবে, আমি বিশ্বাস করি, সামনে নিশ্চয়ই ভাল কিছু আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডাক্তার সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন শারমিন। সাথে শ্বাসনালিও দগ্ধ হয়। তাকে কয়েক দিন আইসিইউতেও রাখা হয়। সব মিলিয়ে দীর্ঘ দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। তবে, মানসিকভাবে অভিনেত্রী এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। তাকে মানসিবকভাবে কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘অনেকটা যুদ্ধ করেই তাকে সুস্থ করে তুলেছেন আমাদের চিকিৎসকরা। এ জন্য আমরাও অনেক আনন্দিত। তবে, এমন সব ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের এখনই সজাগ হতে হবে। না হলে এমন ঘটনার শিকার আমাদের হতেই হবে।’
গত ২৮ জানুয়ারি দুপুর দুইটার দিকে মিরপুর-১১, কালশী রোড অ্যাপেক্স শোরুমের পাশের একটি শুটিংস্পটে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দিন সন্ধ্যায় শারমিন আঁখিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। আগুনে তার দুই হাতের সম্পূর্ণ, দুই পা, মুখমণ্ডল ও মাথার এক পাশসহ শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়।