রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

প্রথম দেখায় টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে সাত উইকেটে হারাল বাংলাদেশ

শুক্রবার, এপ্রিল ৭, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: সিরিজের একমাত্র টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে সাত উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। টেস্ট ফরম্যাটে আয়ারল্যান্ডের সাথে প্রথম দেখাতেই জয় তুলে নিয়ে ইতিহাস বদলে ফেলল বাংলাদেশ। এর আগে টেস্ট খেলুড়ে প্রতিটি দেশের সাথে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দেখাতে হারের ইতিহাস বদলে জয়ের হাসি হাসল সাকিব-তামিমরা।

একমাত্র টেস্টের আগে এ সিরিজে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ২-০ ব্যবধানে ও টি-২০ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ।

১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে আট উইকেটে ২৮৬ রান করেছিল আয়ারল্যান্ড। দুই উইকেট হাতে নিয়ে ১৩১ রানে এগিয়ে ছিল আইরিশরা। অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন ৭১ ও গ্রাহাম হুম নয় রানে অপরাজিত ছিলেন।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনের শুক্রবার (৭ এপ্রিল) পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার এবাদত হোসেন। ম্যাকব্রিনের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। আটটি চার ও একটি ছক্কায় ১৫৬ বলে ৭২ রান করে আউট হন ম্যাকব্রিন। ম্যাকব্রিনের পর আয়ারল্যান্ডের শেষ ব্যাটার হুমকেও শিকার করেন এবাদত। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১৪ রান করা হুম। ২৯২ রানে শেষ হয় আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। ম্যাচ জিততে ১৩৮ রানের টার্গেট পায় বাংলাদেশ। এ ইনিংসে বল হাতে বাংলাদেশের তাইজুল ৯০ রানে চারটি, এবাদত ৩৭ রানে তিনটি ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ২৬ রানে দুই উইকেট নেন।

১৩৮ রানের টার্গেটে তামিম ইকবালের সাথে ইনিংস শুরু করে দ্রুত রান তুলতে থাকেন লিটন দাস। প্রায় সাড়ে তিন বছর ওপেনার হিসেবে নেমে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ১৯ বলে ২৩ রান করে পঞ্চম ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে আউট হন লিটন। লিটনের বিদায়ের পর তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তও। ম্যাকব্রিনের বলে স্লিপে বলবির্নিকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন চার রান করা শান্ত। ৪৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপ অনুভব করে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় ক্রিজে এসেই আয়ারল্যান্ডের বোলারদের উপর চড়াও হন মুশফিকুর রহিম। তামিমকে নিয়ে ১৯তম ওভারে দলের রান ১০০ পার করেন প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মুশি। দলীয় ১০৫ রানে স্পিনার বেন হোয়াইটের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড উইকেটে কমিন্সকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৬৫ বল খেলে তিনটি চারে ৩১ রান করা তামিম। তৃতীয় উইকেটে মুশফিক-তামিম ৭৪ বলে ৬২ রান যোগ করেন। তামিম ফেরার পর মোমিনুল হককে নিয়ে নয় টেস্ট পর বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মুশফিক। এর আগে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট উইকেটে টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ।

টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংসে ৪৮ বল খেলে সাতটি চারে অপরাজিত ৫১ রান করেন মুশফিক। একটি করে চার-ছয়ে ২২ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন মোমিনুল। আয়ারল্যান্ডের অ্যাডায়ার-ম্যাকব্রিন ও হোয়াইট একটি করে উইকেট নেন।

স্কোর কার্ড:
আয়ারল্যান্ড প্রথম ইনিংস (২১৪/১০, ৭৭.২ ওভার)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস (৩৬৯/১০, ৮০.৩ ওভার)
আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ২৮৬/৮, ১০৭ ওভার, ম্যাকব্রিন ৭১*, হুম ৯*) :
মারে কমিন্স এলবিডব্লু ব তাইজুল ১
জেমস ম্যাককলাম এলবিডব্লু ব সাকিব ০
অ্যান্ড্রু বলবির্নি বোল্ড ব তাইজুল ৩
হ্যারি টেক্টর এলবিডব্লু ব তাইজুল ৫৬
কার্টিস ক্যাম্ফার ক লিটন ব সাকিব ১
পিটার মুর ক লিটন ব শরিফুল ১৬
লরকান টাকার ক শরিফুল ব এবাদত ১০৮
অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন বোল্ড এবাদত ৭২
মার্ক অ্যাডায়ার ক লিটন ব তাইজুল
গ্রাহাম হুম ক লিটন ব এবাদত ১৪
হোয়াইট অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-২, নো-২) ৮
মোট (অলআউট, ১১৬ ওভার) ২৯২
উইকেট পতন: ১/১ (ম্যাককলাম), ২/৭ (কমিন্স), ৩/৮ (বলবির্নি), ৪/১৩ (ক্যাম্ফার), ৫/৫১ (মুর), ৬/১২৩ (টেক্টর), ৭/২৩৪ (টাকার), ৮/২৬৫ (অ্যাডায়ার), ৯/২৮৯ (ম্যাকব্রিন), ১০/২৯২ (হুম)।
বাংলাদেশ বোলিং:
সাকিব: ১৩-৪-২৬-২ (নো-১),
তাইজুল: ৪২-১৬-৯০-৪,
মিরাজ: ৩০-৮-৫৮-০,
এবাদত: ১৫-৩-৩৭-৩,
শরিফুল: ৮-১-৩৫-১,
খালেদ: ৭-২-৩৮-০ (নো-১),
মোমিনুল: ১-০-২-০।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস:
তামিম ইকবাল ক কমিন্স ব হোয়াইট ৩১
লিটন দাস বোল্ড অ্যাডায়ার ২৩
নাজমুল হোসেন শান্ত ক বলবির্নি ব ম্যাকব্রিন ৪
মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ৫১
মোমিনুল হক অপরাজিত ২০
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-৪, ও-১) ৯
মোট (তিন উইকেট, ২৭.১ ওভার) ১৩৮
উইকেট পতন: ১/৩২ (লিটন), ২/৪৩ (শান্ত), ৩/১০৫ (তামিম)।
আয়ারল্যান্ড বোলিং:
মার্ক অ্যাডায়ার: ৬-০-৩০-১ (ও-১),
ম্যাকব্রিন: ১৩.১-০-৫২-১,
হোয়াইট: ৭-০-৪৩-১,
টেক্টর: ১-০-৫-০।
ফল: বাংলাদেশ সাত উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মুশফিকুর রহিম(বাংলাদেশ)।
সিরিজ: এক ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ।