ইসলামাবাদ, পাকিস্তান: পাকিস্তানের গণমাধ্যমকে ‘নিয়ন্ত্রিত’ বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান। জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তানের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত। ১৯৭১ সালে পূর্ব-পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) পরিচালিত নির্যাতনের সময়ও তারা এমন ছিল।’
তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে তথ্য লুকিয়ে রাখা যায় না উল্লেখ করে ইমরান বলেন, ‘নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের সময়ে একটি জিনিসই ব্যতিক্রম। আর সেটা হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এর মাধ্যমে মুহূর্তেই তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।’
শুক্রবার (১২ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ইমরান খান। এ দিন, রাতেই বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। এরপর শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
ভাষণের শুরুতে পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ভঙ্গুরতা নিয়ে কথা বলেছেন পিটিআই নেতা। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের গণতন্ত্র সুতোয় ঝুলছে। কিন্তু, বিচার বিভাগ চাইলেই একে বাঁচাতে পারে। কিন্তু, মাফিয়ারা বিচার বিভাগের ওপর আক্রমণ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।’
এ সময় তিনি পুরো পাকিস্তানের সর্বোস্তরের জনগণকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা বিচার বিভাগ ও সংবিধানের পাশে দাঁড়ান।’
নিজের সম্প্রতিক গ্রেফতার ও জামিন নিয়ে কথা বলেছেন ইমরান খান। এ সময় কারাগার থেকে বাঁচানোর জন্য বিচার বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং শাহবাজ শরিফ সরকার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের প্রতি নিন্দা জানান।
ভাষণে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ফের তোপ দেগেছেন পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান। আইএসপিআরকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা রাজনীতিতে নেমে পড়েছেন। তাহলে নিজেদের একটা রাজনৈতিক দল গড়ে তুলুন।’
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালকের উদ্দেশে ইমরান খান বলেন, ‘ডিজি সাহেব, আমি জেলে থাকাকালীন আপনি কিছু বক্তব্য দিয়েছিলেন। আমি তাদের জবাব দিতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আপনি বলেছেন, আমি একজন মুনাফিক। আমি যে পরিমাণে সেনাবাহিনীর ক্ষতি করেছি তা আর কেউ করেনি। ডিজি সাহেব, আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। আপনি যখন জন্মও নেননি তখন আমি পুরো পৃথিবীতে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করছিলাম। আমি সব ফোরামে আমার সেনাবাহিনীকে রক্ষা করেছি।’
ইমরান খান আরও বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ভাল ছিল। তখন জনগণ সেনাবাহিনীকে পছন্দ করতেন।যখন একজন সেনাপ্রধান আমার পিঠে ছুরি মেরে পাকিস্তানের সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধীদের ক্ষমতায় আনেন, তখন কি আমার কারণেই মানুষ সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেছিল? আমার কারণে নয়, সেনাপ্রধানের কর্মকাণ্ডের কারণে সেনাবাহিনীর সমালোচনা হচ্ছে।’