রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

আইন না মেনে কমিটি; বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা

মঙ্গলবার, মে ১৬, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

পাটগ্রাম, লালমনিরহাট: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রম আইন না মেনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের শাখা কমিটি অনুমোদনকে কেন্দ্র করে বন্দরটির শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রম আইন বিরোধী কোন প্রকার কর্মকাণ্ড মেনে না নেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে বুড়িমারী স্থলবন্দরে কার্যক্রমরত তিনটি ট্রেড ইউনিয়ন বুড়িমারী স্থলবন্দর ও স্টেশন কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন, বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন ও বুড়িমারী স্থলবন্দর লোড আনলোড লেবার ইউনিয়ন।

মঙ্গলবার (১৬ মে) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা জানান, বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রম দপ্তর কতৃর্ক তিনটি শ্রমিক ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রাপ্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ৪২ নম্বর আইনের ২০২ (২) ধারা অনুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। শ্রম আইন অনুযায়ী, বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ট্রেড ইউনিয়নই স্থানীয় প্রতিনিধিত্বকারী। বুড়িমারী স্থল বন্দরের কোন শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশের কোন ট্রেড ফেডারেশন বা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত নয়। স্বাভাবিক কারণেই কোন ট্রেড ফেডারেশন বুড়িমারীতে কোন প্রকার শাখা কমিটি দেয়ার আইনগত অধিকার রাখে না। শ্রম আইনের ২০৩ (২) ধারা অনুযায়ী কোন ফেডারেশন কেবলমাত্র সেই প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করবে, যে প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে ওটার কোন সদস্য ট্রেড ইউনিয়ন যৌথ দরকষাকষি হিসাবে আছে। নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া কোন ব্যক্তি কখনোই কোন ট্রেড ফেডারেশনের সদস্য হতে পারে না। যেহেতু, বুড়িমারী স্থলবন্দরের কোন ট্রেড ইউনিয়ন বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত বা সদস্য নয়, তাই স্বাভাবিক কারণে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ শ্রম আইন মোতাবেক বুড়িমারী স্থলবন্দরে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারে না বা কোন শাখা কমিটি অনুমোদন দিতে পারে না। কিন্তু, তারা শ্রম আইন লঙ্ঘন করে গেল ১০ মে বুড়িমারী স্থলবন্দরে ৩৩ জনের একটি শাখা কমিটি অনুমোদন দেয়ার কারণে বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বুড়িমারীর আলোচিত জুয়েল হত্যার আসামী ও তার সহযোগী শামসুল হুদা ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে গ্রেনেড হামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামী। একাধিক মামলার আসামী ও সরকার বিরোধীদের দিয়ে দেয়া এ কমিটির কারণে যে কোন সময় বুড়িমারী স্থলবন্দরে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে।

নেতারা আরো জানান, ২০০৮ সালে এক বার বুড়িমারী স্থলবন্দরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল। এ চক্রান্তের কুশীলব জসিম উদ্দিন সরকার সে সময় সাধারণ শত শত শ্রমিককে বিভ্রান্ত করে ৫০০-১০০০ টাকা করে নিয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কার্ড বিতরণ করেছিল। টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর তার আর কোন খোঁজখবর ছিল না। একই ব্যক্তি এবার বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের নামে বুড়িমারী স্থলবন্দরে গেল ১০ মে একটি শাখা কমিটি অনুমোদন দিয়ে ফের বুড়িমারী স্থলবন্দরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। শ্রম আইন অনুযায়ী একই ব্যক্তি একই সাথে দুইটি ট্রেড ফেডারেশনের সভাপতি থাকার বিধান নেই। অথচ, জসিম উদ্দিন সরকার বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ দুই ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে সকলের নিকট পরিচয় দেন। এ বিষয়ে আমরা শ্রম অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ও তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বুড়িমারী স্থলবন্দরস্থ ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নেতৃবৃন্দ বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রম আইন বিরোধী যে কোন কর্মকান্ড প্রতিহতের ঘোষণা দেন।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি অভিযোগ দেয়া হয় এবং অভিযোগের অনুলিপি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বুড়িমারী স্থলবন্দর কতৃর্পক্ষ উপ পরিচালক, আট নম্বর বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সিএন্ডএফ এসোসিয়েশন বুড়িমারী স্থলবন্দরের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়।