এতকাল ধরে যাদের সাথে আমার বসতি,
সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছি হাতে হাত ধরি,
মমতায় আর ভালবাসায় মেতেছি জীবনভর।
কোথায়ও রাখিনি অপূর্ণ তৃপ্তির ঢেকুর।
আজ জীবন-সায়াহ্নে এসে দাঁড়িয়েছি,
কিন্তু, এতকাল চেনা আপন মানুষরাই আজ
কেমন করে এত অচেনা লাগে, বুঝি না!
এক অজানা সন্দেহের চোখ ইশারা দেয়,
নানা কৌশল করে সুগন্ধি মাখিয়ে গন্ধ ছড়ায়,
আমার স্নায়ুর ঘরে কেন ঘন্টি বাজে? বুঝি না,
এ আমার নিজের ভিতর, নিজের ভাষা
আমি বুঝতে পারি না, পড়তে পারি না,
এরা তো আমারই প্রিয় মানুষ,
অথচ এ প্রিয় মানুষদের কেন লাগে অচেনা, বুঝি না।
আসলে আমি নয়, এ আমারই ভিতরের
আমিত্ব আমাকে বাজায়, আমাকে জাগায়,
আমি তারই চিরচেনা শখের বাঁশরির সুর।
আমিত্বোর স্পর্শে আমার ঘুমন্ত হৃদয় জেগে উঠে,
আমার ভিতরেই শুরু হয় হঠাৎ জোয়ার,
ভিতর থেকে ঘন্টি বাজে, আওয়াজ আসে,
দাঁড়াও, হে পথিক….
দাঁড়াও, নিজেকে প্রশ্ন কর
কোন দিকে যাবে?
বামে না ডানে !
না নিজেকে গা ভাসিয়ে
কাটিয়ে দিবে এভাবে।
নীড় হারা পাখিরাও….
নীড় ফিরে পায় এক দিন।
দিক হারা নাবিকও….
ফিরে পায় তার নিজস্ব দিক ,
এখনই সময় মুখোমুখি বসিবার,
নিজের বোধের কাছে
ঋজু ভঙ্গিতে কাঁদিবার।
খোল তোমার অন্তর চক্ষুর দৃষ্টি
দেখিবে তখন সব কিছুর সৃষ্টি।
বেছে নাও তোমার পছন্দের
ভাল-মন্দের কিস্তি।
কবি: সংস্কৃতিকর্মী, বংশীবাদক, চট্টগ্রাম