শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

টেস্টে শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের

শনিবার, জুন ১৭, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: সফরকারী আফগানিস্তানকে একমাত্র টেস্টে ৫৪৬ বিধ্বস্ত করে ক্রিকেটে এ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে রান হিসেবে এটিই সবচেয়ে বড় জয় বাংলাদেশের। এর আগে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানে জিতেছিল টাইগাররা। সব মিলিয়ে টেস্ট ইতিহাসে রান বিবেচনায় তৃতীয় বড় জয়ের নজির গড়ল বাংলাদেশ। তবে, এ শতাব্দীর বড় জয়। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম দুটি বড় জয় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। ১৯২৮ সালে ব্রিজবেনে ইংল্যান্ড ৬৭৫ রানে অস্ট্রেলিয়াকে ও ১৯৩৪ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়া ৫৬২ রানে হারিয়েছিলো ইংল্যান্ডকে।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৬৬২ রানের টার্গেটে তৃতীয় দিন শেষে দুই উইকেটে ৪৫ রান করেছিল আফগানিস্তান। আট উইকেট হাতে নিয়ে আরো ৬১৭ রান দরকার ছিল আফগানদের। শনিবার (১৭ জুন০ চতুর্থ দিনে পেসার তাসকিন আহমেদের ক্যারিয়ার সেরা ৩৭ রানে চার উইকেট দখলের সুবাদে বাংলাদেশকে খুব বেশি ঘাম ঝড়াতে হয়নি। তৃতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার এবাদত হোসেন। পাঁচ রান নিয়ে শুরু করে এবাদতের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাসির জামাল। ছয় রান করেন তিনি। কিছুক্ষণ বাদে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট উপহার দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। রহমত শাহর বিপক্ষে বাংলাদেশের ক্যাচ আউটের আবেদনে সাড়া দেন আম্পয়ার। কিন্তু, রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান রহমত। রহমতকে শিকার করতে না পারার দুঃখ দ্রুতই ভুলে যান শরিফুল। আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক আফসার জাজাইকে ছয় রানে বিদায় দেন তিনি। গালিতে মেহেদি হাসান মিরাজকে ক্যাচ দেন জাজাই। জাজাইর বিদায়ে কনকাশনে যাওয়া আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদির বদলে খেলতে নামেন বাহির শাহ। আগের দিন পেসার তাসকিনের বাউন্সারে হেলমেটে আঘাত পেয়ে আহত অবসর নিয়েছিলেন শাহিদি। শেষ পর্যন্ত ১৩ রানে থেকেই কনকাশন হলেন শাহিদি।

ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মত টেস্ট খেলতে নেমে শরিফুলের বলে ব্যক্তিগত সাত রানে আউট হন বাহির। ২৫তম ওভারে শনিবার প্রথম বারের মত বোলিংয়ে আসেন আগের দিন এক উইকেট নেয়া তাসকিন। এরপর আফগানিস্তানের তিন ব্যাটারকে শিকার করে বাংলাদেশকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দেন তাসকিন। রহমত শাহকে ৩০, করিম জানাতকে ১৮ ও আহমাদজাইকে এক রানে শিকার করেন তিনি। মাঝে হামজা পাঁচ রানে মিরাজের শিকার হলে ১১০ রানে নয় উইকেটে পরিণত হয় আফগানিস্তান। তাসকিনের বলে আফগানদের শেষ ব্যাটার জহির খান হাতে ব্যথা পেয়ে আহত অবসর নিলে ১১৫ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। এছাড়া, শরিফুল ২৮ রানে তিনটি, মিরাজ-এবাদত একটি করে উইকেট নেন। ২০১৯ সালে টেস্ট ফরম্যাটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দেখায় ২২৪ রানে হারের লজ্জা পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় পর ওই হারের প্রতিশোধ বিশাল ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে নিল বাংলাদেশ।

স্কোর কার্ড (টস- আফগানিস্তান): বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ৩৮২/১০, ৮৬ ওভার (শান্ত ১৪৬, মাসুদ ৫/৭৯)
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস ১৪৬/১০, ৩৯ ওভার (জাজাই ৩৬, এবাদত ৪/৪৭)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ৪২৫/৪ ডি, ৮০ ওভার (শান্ত ১২৪, মোমিনুল ১২১*, জহির ২/১১২)

আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ৪৫/২, ১১ ওভার, রহমত ১০*, জামাল ৫*):
জাদরান ক এলবিডব্লু ব শরিফুল ০
মালিক ক লিটন ব তাসকিন ৫
রহমত ক লিটন ব তাসকিন ৩০
শাহিদি আহত অবসর ১৩
জামাল ক লিটন ব এবাদত ৬
জাজাই ক মিরাজ ব শরিফুল ৬
বাহির ক তাইজুল ব শরিফুল ৭
জানাত বোল্ড ব তাসকিন ১৮
হামজা ক মোমিনুল ব মিরাজ ৫
আহমাদজাই ক মুশফিক ব তাসকিন ১
মাসুদ অপরাজিত ৪
জহির আহত অবসর ৪
অতিরিক্ত (বা-৪, নো-৬, ও-৬) ১৬
মোট (অলআউট, ৩৩ ওভার) ১১৫
উইকেট পতন: ১/০ (জাদরান), ২/৭ (মালিক), ২/২৬ (শাহিদি) আহত অবসর, ৩/৪৮ (জামাল), ৪/৬৫ (জাজাই), ৫/৭৮ (বাহির), ৬/৯১ (রহমত), ৭/৯৮ (জানাত), ৮/১০৬ (হামজা), ৯/১১০ (আহমাদজাই)।

বাংলাদেশ বোলিং: শরিফুল: ১০-১-২৮-৩,
তাসকিন: ৯-২-৩৭-৪ (ও-১, নো-৬),
তাইজুল: ৫-১-১৯-০,
মিরাজ: ২-০-৫-১,
এবাদত: ৭-২-২২-১ (ও-১)।
ফল: বাংলাদেশ ৫৪৬ রানে জয়ী
সিরিজ: এক ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ।