ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করে, যারা খুনিদের মিছিল বরদাশত করবে না।’
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আগস্টের শুরুতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আইনসংগত প্রতিবাদ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করেনি। আমরা সমাবেশের স্বাধীনতা ও সংগঠনের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আজকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত পাঁচ ও আধা মাসে শুধুমাত্র ঢাকাতেই অন্তত ১৩৬টি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু বিক্ষোভ ব্যাপক যানজট সৃষ্টি করেছে। তবুও, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কখনো এসব প্রতিবাদে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।’
‘কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ (আ. লীগ) দলকে কি আমরা বিক্ষোভের অনুমতি দেব? জুলাই ও আগস্ট মাসের ভিডিও ফুটেজ স্পষ্টভাবে দেখায় যে, আ. লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল, যেখানে কিশোর শিক্ষার্থীসহ ছোট শিশুদেরও হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন এই দলই জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা, হত্যা ও তাণ্ডবের জন্য দায়ী।’
তিনি আরও লেখেন, ‘নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গতকাল (২৮ জানুয়ারি) তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সংস্থাটির সাক্ষাৎকার নেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, হাসিনা সরাসরি হত্যাকাণ্ড ও গুমের আদেশ দিয়েছেন তার ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের সময়। তিনি একটি চোর তন্ত্র এবং হত্যার রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার শাসনামলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার লুটপাট করা হয়েছে, যা তার ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠী বিদেশে পাচার করেছে বলে একটি স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তার পরিবার এখন বহুমিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির তদন্তের মুখে।’
‘এছাড়া, তার শাসনামলে সাড়ে তিন হাজার জন গুমের শিকার হয়েছেন। ৩ হাজার জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন, শাপলা চত্বরের গণহত্যা ও মাওলানা সাঈদীর রায়ের পর প্রতিবাদী জনতাকে দমন করা হয়েছে, পুলিশের ভূমিকা হয়ে উঠেছিল ‘পুলিশ লীগ’, ছয় মিলিয়ন বিরোধী কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে, দেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতিকে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়, তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং নির্বাসনে পাঠানো হয়।’
ফেসবুক স্ট্যাটাসে শফিকুল আলম লেখেন, ‘আ. লীগ যদি তাদের এই গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও দুর্নীতির জন্য জাতির কাছে ক্ষমা না চায়, যদি অপরাধী নেতাকর্মীরা বিচারের আওতায় না আসে, যদি তারা তাদের ফ্যাসিস্ট আদর্শ ত্যাগ না করে- তাহলে তাদের কোনোভাবেই বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। মিত্র বাহিনী কি নাৎসিদের বিক্ষোভ করতে দিয়েছিল?’
‘বিশ্বের কোনো দেশ খুনি ও দুর্নীতিবাজদের আবার ক্ষমতায় ফেরার সুযোগ দেয় না। কোনো দেশ বিচার ছাড়া পুনরুদ্ধার বা পুনর্গঠনের অনুমতি দেয় না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করে, যারা খুনিদের মিছিল বরদাশত করবে না। আওয়ামী লীগ যদি বেআইনি বিক্ষোভ করার চেষ্টা করে, তাহলে তারা আইনের পূর্ণ শক্তির মুখোমুখি হবে।’