শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

শিরোনাম

অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে সুপার এইট শুরু বাংলাদেশের

শুক্রবার, জুন ২১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

অ্যান্টিগা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ: হার দিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্ব শুরু করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (২১ জুন) সুপার এইটে গ্রুপ-১এ নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪০ রান করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে ২৮ বলে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন তাওহিদ হৃদয়। বল হাতে এ ম্যাচে হ্যাট্টিক করেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্স। উত্তরে ১১ দশমিক দুই ওভারে দুই উইকেটে ১০০ রান করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর বৃষ্টির কারণে তৃতীয় বারের মত খেলা বন্ধ হয়। তখন বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে এগিয়ে ছিল অজিরা। এ অবস্থায়ন আর খেলা মাঠে না গড়ালে বৃষ্টি আইনে ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্টিগায় স্যার ভিভিয়ান রিচাডর্স স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হাতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলে অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হন বাংলাদেশ ওপেনার তানজিদ হাসান। দলের রানের খাতা খোলার পূর্বেই ফিরেন তানজিদ। চলতি বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের একটিতেও বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি দুই অংকের কোটা স্পর্শ করতে পারেনি। শুরুতেই উইকেট হারানো পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার লিটন দাস ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুইজনের জুটিতে পাওয়ার প্লেতে ৩৯ রান পায় বাংলাদেশ। অষ্টম ওভারে বাংলাদেশের রান ও জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়। পরের ওভারে স্পিনার এডাম জাম্পার বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর আউট হন দুইটি চারে ২৫ বলে ১৬ রান করা লিটন। দ্বিতীয় উইকেটে শান্তর সঙ্গে ৪৮ বলে ৫৮ রান যোগ করেন লিটন। লিটনের বিদায়ে পিঞ্চ হিটার হিসেবে চার নম্বরে নেমে দুই রানে আউট হন রিশাদ হোসেন। কিছুক্ষণ পর এ অবস্থায় উইকেটে সেট হয়ে সাজঘরে ফিরেন অধিনায়ক শান্ত। জাম্পার বলে সুইপ করতে গিয়ে মিস টাইমিংয়ে লেগ বিফোর আউট হন তিনি। পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৬ বলে ৪১ রান করেন শান্ত। ১৩তম ওভারে দলীয় ৮৪ রানে শান্তর বিদায়ের পর জুটি গড়ার চেষ্টায় বেশি দূর যেতে পারেননি তাওহিদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসান। দলের রান ১০০ পার হওয়ার পর টি-টোয়েন্টির এক নম্বর অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিসকে বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন দশ বলে আট রান করা সাকিব। ১৯ বলে ১৯ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। সাকিব ফেরার ওভারেই পরপর দুইটি ছক্কা মারেন হৃদয়। প্যাট কামিন্সের করা ১৮তম ওভারের শেষ দুই বলে মাহমুদুল্লাহ দুই ও জাকের আলির বদলে খেলতে নামা মাহেদি হাসান শুন্যতে আউট হন। এতে হ্যাট্টিকের সুযোগ তৈরি হয় কামিন্সের। ২০তম ওভারের প্রথম বলে হৃদয়কে শিকার করে হ্যাট্টিক পূর্ণ করেন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া কামিন্স।

দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে বিশ্বকাপে হ্যাট্টিক করলেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বোলার হিসেবে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাট্টিক করেছিলেন পেসার ব্রেট লি। সেটিও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই। টি-২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি সপ্তম হ্যাট্টিক।

দুইটি করে চার-ছক্কায় বাংলাদেশের পক্ষে ২৮ বলে ৪০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন হৃদয়। শেষ দিকে তাসকিন আহমেদের সাত বলে অপরাজিত ১৩ রানে ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৪০ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স ২৯ রানে তিনটি, জাম্পা ২৪ রানে দুইটি উইকেট নেন।

১৪১ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেট তুলে নিতে পারত বাংলাদেশ। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের করা ওভারের প্রথম বলে পয়েন্টে ওয়ার্নারের ক্যাচ ফেলেন হৃদয়। পাঁচ রানে জীবন পেয়ে সতীর্থ ট্রাভিস হেডকে নিয়ে ঝড় তোলেন ওয়ার্নার। পাওয়ার প্লেতে ৫৯ রান যোগ করেন তারা। সপ্তম ওভারে নামে বৃষ্টি। প্রায় ৩০ মিনিট বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকার পর খেলা শুরু হলে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। তিনটি চার ও দুইটি ছক্কায় ২১ বলে ৩১ রান করা হেডকে বোল্ড করেন রিশাদ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মিচেল মার্শকে এক রানে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন রিশাদ। চার রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে অজিরা। ৬৯ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর তৃতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে দ্রুত রান তুলতে থাকেন ওয়ার্নার ও ম্যাক্সওয়েল। ১৫ বলে ৩১ রান তুলে ফেলেন তারা। ১২তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে টি-টোয়েন্টিতে ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ওয়ার্নার। এরপর ফের বৃষ্টি নামলে বন্ধ হয় খেলা। এ সময় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ১১ দশমিক দুই ওভারে দুই উইকেটে ১০০ রান। এ অবস্থায় বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে এগিয়ে ছিল অজিরা। এরপর বৃষ্টির মাত্রা আরো বেড়ে গেলে খেলা সম্ভব না হওয়ায় বৃষ্টি আইনে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।

পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কায় ওয়ার্নার ৩৫ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন। একটি করে চার-ছক্কায় ছয় বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাক্সওয়েল। বাংলাদেশের রিশাদ ২৩ রানে দুই উইকেট নেন।

শনিবার (২২ জুন) সুপার এইটে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটা ৩০ মিনিটে।