নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের বার্ষিক বনভোজন। দিনভর নাচ-গান, খেলাধুলা ও আনন্দ-আড্ডায় মেতেছেন আমেরিকায় কর্মরত বাংলাদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক ও তাদের পরিবার পরিজন।
শনিবার (৩ জুন) লং আইল্যান্ডের বেলমন্ট লেক স্টেট পার্কে এ বনভোজনের আয়োজন করা হয়। পার্কের সবুজ পরিবেশে এ দিন মিলনমেলা ঘটে বাংলাদেশি সাংবাদিক পরিবার ও মিডিয়া প্রেমী সুধীজনদের।
অন্য সব দিনের মত এ দিনের সকাল শুরু হলেও সংগঠনটির সদস্যদের কাছে ছিল একটু অন্য রকম। সকাল থেকে শুরু হয়ে যায় বনভোজনের প্রস্তুতি। নিজেদের পছন্দমত পোশাক পরে বনভোজনের স্থানে জমায়েত হতে থাকেন গণমাধ্যম কর্মীরা। তাদের সাথে উৎসবে সামিল হন তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেলমন্ট লেক স্টেট পার্ক সরগম হয়ে ওঠে সাংবাদিকদের আনাগোনায়। মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে একে অন্যের সাথে আলাপচারিতায় মেতে উঠেন সবাই। গণমাধ্যম কর্মীরা যেমন একে অপরের সাথে আড্ডায় মেতে উঠেন, তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও একে অন্যের সাথে সখ্যতা গড়তে ব্যস্ত সময় পার করেন।
এ দিন বনভোজনে বিভিন্ন ধরনের ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে ছিল শুভেচ্ছা বিনিময়, আড্ডা, শিশু-কিশোর-কিশোরী, মহিলা ও পুরুষদের নানা খেলাধুলাসহ কুইজ প্রতিযোগীতা। সেই সাথে ছিল তরমুজ খাওয়া, মধ্যাহ্ন ভোজ, বিকালে চা-চক্র ও ঝালমুড়ি। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল র্যাফেল ড্র আর সঙ্গীতানুষ্ঠান।
দুপুরে বনভোজনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকার সম্পাদক শাহ নেওয়াজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ সাঈদ ও অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনজুরুল হক। এ সময় উপস্থিতি ছিলেন ক্লাবের সাবেক সভাপতি দর্পণ কবীর, বারি হোমকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আসেফ বারি টুটুল, অ্যাপেলো বোকারেজের সিইও শমসের চৌধুরী, খলিল বিরিয়ানি গ্রুপের সিইও খলিলুর রহমান, নিউইয়র্ক প্রেস ক্লারেব সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, সাংবাদিক আমনউদ্দৌলা, মুক্তচিন্তা সম্পাদক ফরিদ আলম, ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান রচি, স্টার ফার্নিচারের সিইও রকি আলিয়ান, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট ও রাজনীতিবিদ মোতাহার হোসেন, গোলাম এন হায়দার মুকুট, আবদুর রশিদ বাবু, এসেনসিয়াল হোমকেয়ার কর্মকর্তা আরিফুল হাসান, মেজবা উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, ক্লাবের কোষাদক্ষ মশিউর রহমান মজুমদার, লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, শিক্ষিকা সালমা ফেরদৌস, মোস্তফা অনিক রাজ, ক্লাবের সদস্য বেলাল আহমেদ, তোফাজ্জল লিটন, আব বকর সিদ্দিক, কন্ঠ শিল্পী রানো নেওয়াজ, ফটো সাংবাদিক তুষার আহমেদ, আমজাদ হোসেন।
এরপর শুরু হয় একে একে ঝমকালো সব অনুষ্ঠান। মধ্যহ্ন ভোজের আগে ও পরে আয়োজন ছিল খেলাধুলার। শিশু-কিশোর-কিশোরীদের দৌড়, তরুণদের জন্য বাংলাদেশকে নিয়ে লিখিত কুইজ প্রতিযোগীতা, মহিলাদের মিউজিক্যাল পিলো পাসিং, পুরুষদের ফুটবলে পেনাল্টি গোল খেলা। পড়ন্ত বিকালে শুরু হয় নিউইয়র্কের শিল্পী শাহ মাহবুব, কৃষ্ণা তিথি ও মরিয়ম মারিয়ার একক ও যৌথ পরিবেশনা। শিল্পীদের সাথে সবাই নেচে গেয়ে ও গানের কন্ঠে গলা মিলিয়ে এক অনন্য উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
সবশেষে ক্লাব কর্মকর্তারা ও আগত অতিথিরা বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন। বিজয়ীদের মধ্যে মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন সানমান গ্লোবালের সিইও মাসুদ রানা তপন, লায়ন্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান জিলানী, ক্লাব সদস্য সীমা সুষ্মিতা, পাপিয়া বেগম, সরোয়ার হোসেন, স্যামুয়েল স্টিফেন পিনারু।
বনভোজন কমিটির আহবায়ক তাপস সাহা ও সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান পহলভি অনুষ্ঠানের সামগ্রিক তদারকি ও বিভিন্ন প্রকার খেলাধুলা পরিচালনা করেন।
তারা বলেন, ‘বনভোজনে নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিক, সমাজসেবক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল। আমরা চেষ্টা করেছি, সবাইকে একটি উৎসবমুখর দিন উপহার দিতে। আমরা আশা করি, সেটা পেরেছি। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে।’
বনভোজনে স্পন্সর ছিল মার্কস হোমকেয়ার, কুইন্স এডাল্ট ডে কেয়ার, এসেনসিয়াল হোম কেয়ার, গোল্ডেন এইজ হোমকেয়ার, ইমিগ্রান্ট এল্ডার হোম কেয়ার, বারি হোম কেয়ার, স্টার ফার্নিচার, অ্যাপেলো ব্রোকারেজ।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব।