শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ‘অদম্য’ প্রকল্প

সোমবার, জুন ১৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

কিশোরগঞ্জ: আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে যৌথভাবে ‘অদম্য’ প্রকল্প নিয়েছে জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট ও মালালা ফান্ড। শনিবার (১৭ জুন) কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। ২০২২ এর নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া তিন বছরের এ প্রকল্প চলবে আগামী ২০২৫ পর্যন্ত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন মালালা ফান্ড, বাংলাদেশের প্রতিনিধি মোশাররফ তানসেন, জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ।

প্রকল্পটি বাংলদেশে শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়া মেয়ে শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার একটি প্রয়াস। জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য ও লিঙ্গ বৈষম্যের মত বিভিন্ন বাধা মোকাবিলা করে মেয়েদের ক্ষমতায়ন, অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যম গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়াই এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।

প্রকল্পের বিষয়ে করভি রাকসান্দ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ৩৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ মেয়ে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয় না এবং দারিদ্র্য, বৈষম্য ও পরিবেশগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে এর প্রায় অর্ধেকই ঝরে পড়ে; যা তাদের শিক্ষার পথ চলায় বাধা সৃষ্টি করে। আমার বিশ্বাস, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হলে এটি মেয়েদের সঠিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে তাদের পূর্ণ সম্ভাবনাই পৌঁছতে সাহায্য করবে।’

মোশাররফ তানসেন বলেন, ‘মালালা ফান্ড মূলত কাজ করে প্রত্যেক শিশু ও নারীসহ সবাই যেন গুণগত শিক্ষার আওতায় চলে আসে। সেই আলোকে মালালা ফান্ড ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ শুরু করেছে। আপনারা জানেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির দিক দিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে। আমরা চাই, আমাদের মেয়েদের জলবায়ু পরিবর্তনের সহনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে। আমাদের অদম্য কর্মসূচির এইটাই লক্ষ্য। এ জন্য, আমরা চর, হাওর অঞ্চল বেছে নিয়েছি- এ কর্মসূচির জন্য এবং জাগো ফাউন্ডেশন মিঠামইনে এ কাজটার জন্য দায়িত্ব পেয়েছে। এখন জাগো ফাউন্ডেশন দুইটা স্কুলে কাজ শুরু করেছে। তবে, আমরা আশা করছি, সামনে আরো নয়টা স্কুল ও দুইটা মাদ্রাসায় কাজ শুরু করবে।’

নেহাল আহমেদ বলেন, ‘জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের মত সংগঠন, যারা আমাদের হাওর এলাকায় এসে, শিক্ষা ক্ষেত্রে কাজ করছে- এমন দৃষ্টান্ত বিরল। জাগো ফাউন্ডেশন ও মালালা ফান্ড আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করছে, হাওর এলাকায় যারা ঝরে পড়ছে, তাদের নিয়ে কাজ করছে, এভাবে আমাদের শিক্ষার উন্নয়নে ও জাতি গঠনে তারা ভূমিকা রাখছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, একটি শিক্ষিত জাতি যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা গড়তে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কিন্তু উন্নত জাতিতে পরিণত হতে পারব না।’

এ প্রকল্পের একজন সুবিধাভোগী ঘাগড়া আঘাগড়া আ. গণি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জাগো ফাউন্ডেশন ও মালালা ফান্ডের এ অদম্য প্রকল্পটি নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। আমার মতে, এটি আমাদের ছাত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। এ প্রকল্পটি দারিদ্রতা ও বিভেদের মত সীমাবদ্ধতা ভেঙে দিয়ে একটি অনুকূল ও সহায়ক শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে- আমি আশা করি। দারিদ্রতা, সামাজিক নিয়ম ও বৈষম্যের মত বাধা ভেঙে দিয়ে, এ প্রকল্পটি আমাদের দেশের মেয়েদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুত করবে। আমাদের মেয়েরা হবে স্বাবলম্বী, পৌঁছাবে উচ্চতার নতুন শিখরে।’