ঢাকা: শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আগামী ১ জানুয়ারি রায়ের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে রায়ের দিন ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় মুহাম্মদ ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কোন অপরাধ করিনি। আশা করছি, আদালতের রায়ে সত্য প্রমাণিত হবে।’
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) এ মামলায় ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। রাত আটটা ২০ মিনিটে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ দিন ধার্য করেন।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) আদালতে ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট মো. হায়দার আলী। শুনানিতে ইউনূসসহ আসামিদের খালাসের আর্জি জানান তার আইনজীবী। অন্য দিকে, ইউনূসসহ আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আর্জি জানান।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে আসামিদের বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন কলকারখানা অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও হায়দার আলী।
এর পূর্বে, বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে মুহাম্মদ ইউনূস তার আইনজীবীসহ আদালতে হাজির হন। ১১টা ৩৩ মিনিটে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। দুই দফায় বিরতি দিয়ে মাগরিবের পরও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলে।
গেল ২১ ডিসেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলায় মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে মামলার আইনগত ব্যাপারে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এ দিন, যুক্তি উপস্থাপন অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
সেদিন আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছিলেন, ‘এ মামলার সাক্ষীদের বর্ণনায় ইউনূসসহ অন্যরা সংশ্লিষ্ট আছেন- এমন কোন বর্ণনা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোন ডকুমেন্ট নেই।
মামলার আর্জিতে কোথাও আসামিরা অপরাধী এমন কোন অভিযোগ উল্লেখ নেই। কোম্পানি আইন অনুযায়ী অপরাধ কোম্পানির হবে। কিন্তু, এখানে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ কারণে এ মামলা চলতে পারে না।
গেল ৬ ডিসেম্বর এ মামলায় ইউনূসকে শ্রম আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে (রোববার পর্যন্ত) অব্যাহতি দেন আদালত। ওই দিন মুহাম্মদ ইউনূস সপ্তম বারের মত শ্রম আদালতে হাজির হন।
বলে রাখা ভাল, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়েছে।