মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ইউক্রেনের পাল্টা অভিযান হবে দীর্ঘ, কঠিন ও খুবই রক্তক্ষয়ী

রবিবার, জুলাই ২, ২০২৩

প্রিন্ট করুন
মার্ক মিলি

ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্টা অভিযান হবে দীর্ঘ, কঠিন ও খুবই রক্তক্ষয়ী। এমনটা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও জয়েন্ট চীফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি। শুক্রবার (৩০ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে এক সভায় এ কথা বলেন তিনি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেন সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। এ অভিযানে দেশটির সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকা দখল করে নিয়েছে দেশটি। অধিকৃত ওই সব এলাকা পুনরুদ্ধারে গেল মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান শুরু করে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তবে, পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ইউক্রেন। যেভাবে বলা হয়েছিল, সেভাবে অগ্রগতি হয়নি। ইউক্রেনের এ পাল্টা অভিযান বিষয়ে কথা বলেন মার্ক মিলি। পাল্টা অভিযানের ধীরগতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যাশার চেয়ে ধীরগতিতে অগ্রগতি হওয়াতে তিনি বিস্মিত নন।’

তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন অবিচলভাবেই সামনে এগোচ্ছে।’ তার কথায়, ‘অভিযান একটু ধীর গতিতে চলছে। তবে, এটি যুদ্ধের গতিপ্রকৃতিরই অংশ।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও পাল্টা অভিযানের মন্থরগতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে, এ জন্য তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রতিশ্রুত প্রশিক্ষণ দিতে দেরি করছে মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো।’

মার্ক মিলি ফের বলেন, ‘পাল্টা অভিযান অবিচলভাবেই এগুচ্ছে। মাইন পেতে রাখা পথে অনেক কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের সেনারা ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। দিনে ৫০০ মিটার, এক হাজার মিটার, দুই হাজার মিটার- এমন করে।’

এরপর তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, এ অভিযান ছয়, আট কিম্বা দশ সপ্তাহ লেগে যাবে। আর এটা খুবই কঠিন হবে, খুবই দীর্ঘ হবে ও খুবই রক্তক্ষয়ী হবে। এ বিষয়ে কারোই কোন বিভ্রম থাকা উচিত হবে না।’

জয়েন্ট চীফ অব স্টাফের চেয়ারম্যানের পাশাপাশি জেনারেল মিলি মার্কিন প্রেসিডেন্ট, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান সামরিক উপদেষ্টাও।

তিনি আরো বলেন, ‘মানবিক দিক থেকে ইউক্রেনকে যতখানি সাহায্য করা সম্ভব, যুক্তরাষ্ট্র তা করছে। এ দিকে, ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ভ্যালেরি জালুঝি বলেছেন, ‘পর্যাপ্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদের অভাবে ইউক্রেনের পাল্টা অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।’

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগ দিতে চাওয়ায় গেল বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধের মধ্যদিয়ে তা সম্পূর্ণ যুদ্ধে রূপ নেয়। যুদ্ধের কয়েক মাসের মধ্যে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটা অঞ্চল দখল করে নেয় রুশ বাহিনী।

রাশিয়া অধিকৃত ওই অঞ্চলগুলো উদ্ধারে গেল কয়েক মাস ধরে পাল্টা অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেয় ইউক্রেন। অবশেষে গেল সপ্তাহে (৪ জুন) দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সেই অভিযান শুরু হয়। তবে, এক সপ্তাহ পর পাল্টা অভিযানের বিষয়টি ঘোষণা দিয়ে জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

রাশিয়া বলছে, তাদের অভিযানের কারণে ইউক্রেনীয় বাহিনী বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। পাল্টা অভিযানের কয়েক দিন পরই রুশ প্রেসিডেন্ট তিনি বলেন, ‘রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পাল্টা আক্রমণ ব্যর্থ হয়েছে। তাদের প্রতিরক্ষা ব্যুহ উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।’