বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ইউনূসকে শিক্ষার্থীরা, ‘দলবাজ ছাত্র-শিক্ষককে ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না’

রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: রাজনৈতিক দলীয় ট্যাগধারী ছাত্র ও শিক্ষককে ক্যাম্পাসে দেখতে চান না বলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে মত বিনিময়কালে শিক্ষার্থীরা এ কথা বলেন। মত বিনিময়ে শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারকে নানা ব্যাপারে পরামর্শ দেন ও বিভিন্ন দাবি জানান।

রাজনীতিকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ক্যাম্পাসে, ক্লাসে একজন শিক্ষক শুধু শিক্ষক থাকবেন, একজন ছাত্র শুধু ছাত্র থাকবেন। কোন ট্যাগধারী ছাত্র ও শিক্ষককে আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না।’

যারা বিদেশে উচ্চ শিক্ষায় গিয়েছেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা ও দেশে তাদের মেধার মূল্যায়ন করে দেশের কাজে লাগাতে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষার্থীরা।

তারা বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েশনের পর বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরছেন না বলে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাংকিং বাড়ছে না। দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব তৈরি হচ্ছে না।’

এ সময় একজন শিক্ষার্থী টাকা পাচারের চেয়ে মেধা পাচার বেশি ভয়ানক বলে মন্তব্য করেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে যারা বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত আছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদীর দোসররা বর্তমানে নানা সেক্টরে যারা আছেন, তাদের আমরা আর দেখতে চাই না। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণকে এ মুহূর্তে একটি প্রধান কাজ হিসেবে বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।

তারা বলেন, ‘মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণ করা এ মুহূর্তে প্রধান কাজের একটি। মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এটা যদি সমাজের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়, কোন কুচক্রীমহল এ দূরাবস্থার সুযোগ নিয়ে আমাদের ভেতরে ঢুকে আমাদের ঐক্য নষ্ট করার চেষ্টা করবে।’

সরকারি হাসপাতালের অনিয়মের ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক ও এক নারী মেডিকেল শিক্ষার্থী বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে রোগীদের যেন হেনস্তা না হতে হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা চাই, চিকিৎসা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হোক। যেখানে শুধু চিকিৎসক নন, রোগীদেরও সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।’

ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘সিভিল সার্ভিস, জুডিশিয়ারি সার্ভিসের মত সব মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসের অধীনে আনা গেলে বহু স্বচ্ছতা ও সেবার মান বাড়বে।’

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানো ও বিপণন ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। সার-কীটনাশক, কৃষি সরঞ্জামে ভুর্তকি ও মূল্য কমাতে হবে।’

আগামীতে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে বলেন তারা।

সভায় মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন ও তাদের বিভিন্ন পরামর্শ মনোযোগ দিয়ে শোনেন।

সভায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল; বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার; তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।