সানা, ইয়েমেন: যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইয়েমেনে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) একটি দাতব্য সংস্থার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে পদদলিত হয়ে ৮৫ জন নিহত ও কয়েক শত আহত হয়েছে। হুথি কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘গেল এক দশকের মধ্যে এটা সবচেয়ে মারাত্মক পদদলিত হওয়ার ঘটনা।’ খবর এএফপির।
মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল-ফিতরের ছুটির মাত্র ২/৩ দিন আগে আরব উপদ্বীপের দরিদ্রতম দেশটিতে সর্বশেষ এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এক হুথি নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাব আল-ইয়েমেন জেলার রাজধানীতে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ‘৮৫ জন নিহত ও ৩২২ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু ছিল।’
দ্বিতীয় এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ পরিসংখ্যান নিশ্চিত করেছেন।
হুথি-নিয়ন্ত্রিত সানায় এক সংবাদদাতা জানিয়েছেন, একটি স্কুলের ভেতরে দাতব্য সংস্থার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সময় এ বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দারিদ্র-পীড়িত দেশটির শত শত মানুষ ত্রাণ সামগ্রী নেয়ার জন্য স্কুলটিতে জড়ো হয়েছিল।
হুথি বিদ্রোহীদের ‘আল মাসিরাহ টিভি চ্যানেলে’ সম্প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক গুচ্ছ লাশ একত্রে বস্তাবন্দী করে রাখা হচ্ছে। লোকজন একে অপরের ওপরের কাঁধে উঠে ত্রাণ সামগ্রী নেয়ার চেষ্টা করছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অনেকের মুখ অন্যের হাত দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। তাদের দেহের অবশিষ্টাংশ প্রচন্ড ভিড়ে ঢাকা পড়েছিল।
সামরিক পোশাকে সশস্ত্র যোদ্ধারা ও বিতরণ কর্মীরা ভিড়ের মধ্যে চিৎকার করে লোকজনকে সরিয়ে পদদলিত হয়ে নিহতদের বের করে আনে।
হুথির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা সাবার মাধ্যমে বিবৃতিতে জানায়, নিহত ও আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ও ত্রাণ বিতরণের জন্য দায়ীদেরকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রনালয় হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যান জানাতে পারেনি। তবে, বেশকিছু ব্যবসায়ী অগোছালোভাবে নগদ টাকা বিতরণের সময় বেশকিছু লোক পদপৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
হুথির রাজনৈতিক প্রধান মাহদি আল-মাশাত বলেছেন, ‘ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
একজন হুথি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।’
শীর্ষ কর্মকর্তারাও মৃত ও আহতদের দেখতে যাচ্ছেন বলে নিহতদের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে গেলেও অনেককে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
সানায় এএফপির এক সংবাদদাতা হাসপাতালের একটি প্রবেশ পথে বিপুল সংখ্যক জনতাকে নেমে আসতে দেখেছেন।
সংবাদদাতা জানান, যে স্কুলে ঘটনা ঘটেছে, তার চারপাশে ব্যাপকভাবে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী নিহতদের স্বজনদের মরদেহ শনাক্ত করতে স্কুলের ভেতরে প্রবেশে বাঁধা দেয়।