ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মিল্কশেক পান করে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো তিনজন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওয়াশিংটনের টাকোমার একটি সস্তা রেস্তোরাঁয় ওই ঘটনা ঘটেছে। ওই মিল্কশেক লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত ছিল বলে জানা গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর সিএনএনের।
ওয়াশিংটনের স্বাস্থ্য বিভাগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মিল্কশেকের উপাদানে কোন সমস্যা ছিল না। সমস্যা ছিল মিল্কশেক তৈরির মেশিনে। মেশিনগুলো ভালভাবে পরিষ্কার করা হয়নি। তাই, ওখানে লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া জমে যায়।
লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া খাওয়ার পর ৭০ দিন পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গেল ৭ আগস্ট পর্যন্ত অপরিষ্কার মেশিনগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল।
এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যেও ছয় ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এই ছয়জনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়। বাকি তিনজনের দুইজন জানায় তারা টাকোমার ওই একই রেস্তোরাঁয় মিল্কশেক পান করেছিল।
স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক করে বলে, ‘যারা ২৯ মে থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত টাকোমা রেস্তোরাঁয় খেয়েছেন, তাদের মধ্যে লিস্টেরিয়ার লক্ষণ দেখাচ্ছে। লক্ষণ দেখা গেলে তারা স্থানীয় ডাক্তারের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানায়, লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজিন ব্যাকটেরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় এক হাজার ৬০০টি লিস্টারিওসিসের ঘটনা ঘটে। প্রতি বছর প্রায় ২৬০ জন মানুষ এই রোগে মারা যায়।
সাধারণত বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক, গর্ভবতী নারী, শিশু ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে- এমন ব্যক্তিদের লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া বেশি আক্রমণ করে।
সিডিসির তথ্য মতে, গর্ভবতী নারীদের লিস্টারিওসিস হওয়ার শঙ্কা প্রায় দশ গুণ বেশি থাকে। তবে, গর্ভবতী হিস্পানিক নারীদের এ ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ২৪ গুণ বেশি।
লিস্টেরিয়া আসলে কী: লিস্টারিওসিস হল একটি মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, যা লিস্টেরিয়া মোনোসাইটোজেনাসের কারণে হয়। মাঝে মাঝে এই রোগকে ‘লিস্টারিয়া’বলা হয়। এই রোগ যে ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয় তার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে। লিস্টেরিয়া সংক্রমণের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, পেশি ব্যথা ও কখনো কখনো ডায়রিয়া বা অন্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা। বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো হল মাথাব্যথা, খিঁচুনি, জ্বর, অনমনীয় ঘাড়, বমি, ডায়রিয়া বা অতিসার। উপসর্গগুলো সংক্রমণ ঘটার এক থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে দেখা দিতে পারে।