নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনুশে শফিক পদত্যাগ করেছেন। গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের চার মাস পর বুধবার (১৪ আগস্ট) পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিবৃতিতে ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে। সংবাদ আল জাজিরার।
গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের বন্ধের দাবিতে গেল এপ্রিলে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউইয়র্ক সিটি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু হয়। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখাদেখি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বহু বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে এ বিক্ষোভ।
বিক্ষোভ যখন ক্রমেই গতি পাচ্ছিল, তখন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ও কর্মীদের ক্রমবর্ধমান ইহুদিবিদ্বেষ থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে- এমন অভিযোগে মিনুশে শফিককে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ডেকে পাঠানো হয়।
পর দিনই শফিক নিউইয়র্ক সিটি পুলিশকে ক্যাম্পাসে ডেকে বিক্ষোভ থামানোর অনুমতি দেন। পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের ফেলা তাঁবু সরিয়ে দেয় ও প্রায় ১০০ জনকে গ্রেফতার করে। ব্যাপারটি বিক্ষোভকারী ও কিছু শিক্ষাবিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তারা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের আহ্বান জানায়।
এপ্রিলের শেষের দিকে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। কারণ, পুলিশ এবার ক্যাম্পাসে অভিযান চালায়। একাডেমিক ভবন হ্যামিল্টন হলে ঢুকে ও সেখানে অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের সবাইকে সরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া, প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার করে। এরপর প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি আরো জোরালো হয়।
প্রায় চার মাস পর বুধবার (১৪ আগস্ট) পদত্যাগের ঘোষণা দেন মিনুশে শফিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের বরাবর লেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, ‘এ সময়কালটি আমার পরিবারের ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে, যেমনটা প্রভাব ফেলেছে আমাদের সমাজের অন্যদের ওপরও। এটা একটা অশান্তির সময়ও যেখানে আমাদের সমাজের ভিন্ন ভিন্ন মতামত অতিক্রম করাও কঠিন ছিল।’
শফিক বলেন, ‘আমি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছি ও সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এ মুহুর্তে আমার সরে যাওয়া কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে সক্ষম করে তুলবে।’
শফিকের পদত্যাগকে কিছু বিক্ষোভকারী স্বাগত জানিয়েছে। যারা তাকে ইহুদি-বিদ্বেষকে বিকাশের সুযোগ দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছিল, তাদের কেউ কেউও এ পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টিরা জানিয়েছেন, ক্যাটরিনা আর্মস্ট্রং কলাম্বিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বর্তমানে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি আরভিং মেডিকেল সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।