ঢাকা: কোড শেয়াারিংয়ের মাধ্যমে জাপান হয়ে অন্যান্য এয়ারলাইন্সের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়রলাইনস। ১ সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান পুনরায় ঢাকা-নারিতা রুটে চলাচল শুরু করার পরিকল্পনা করছে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউল আজিম রোববার (২১ মে) বলাকা ভবনে প্রধান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অন্যান্য এয়ারলাইন্সের সাথে ইন্টারলিংকিং বা কোড শেয়ারিং বিষয়ে সম্ভাবনা অনুসন্ধান করছি, যাতে আমরা ৩৬০ ডিগ্রি এয়ারলাইনের মত আমাদের যাত্রীদের জাপানের বাইরে বিভিন্ন রুট অফার করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘এয়ারলাইন্সকে বাজারে আরো প্রতিযোগিতামূলক করতে বিমান কোড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রুট অনুসন্ধান করছে।’
কোড শেয়ারিং এমন একটি বিপণন ব্যবস্থা, যেখানে একটি এয়ারলাইন অন্য এয়ারলাইন দ্বারা পরিচালিত একটি ফ্লাইটে তার নির্ধারিত কোড স্থাপন করে এবং সেই ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি করে। সারা বিশ্বে এয়ারলাইনগুলো তাদের বাজারে উপস্থিতি ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতাকে জোরদার বা প্রসারিত করতে কোড-শেয়ারিং ব্যবস্থা ব্যবহার করে চলেছে।
বিমানের প্রধান আরো বলেন, ‘জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাটি আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা থেকে জাপানের নারিতা পর্যন্ত সাপ্তাহিক তিনটি ফ্লাইট চালু করবে।’
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে একটি এয়ার ট্রাফিক চুক্তি হয়েছে। এতে টোকিও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে সে দেশে ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে পঞ্চম স্বাধীনতা সুবিধা ভোগ করার অনুমতি দিয়েছে।
পঞ্চম স্বাধীনতা একটি এয়ারলাইনকে তার নিজের দেশ থেকে দ্বিতীয় দেশে এবং সেই দেশ থেকে তৃতীয় দেশে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার অধিকার দেয়।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) দীর্ঘ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটির (এফএএ) সাথে বাংলাদেশের মর্যাদা ‘ক্যাটাগরি ১’ এ উন্নীত করার জন্য নিযুক্ত রয়েছে; যাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ স্থানীয় এয়ারলাইন্সগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে।
এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে বিমানের এমডি বলেন, ‘এয়ারবাসের অফারটি প্রমাণ করেছে যে, তাদের এয়ারলাইন্সের আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণ ও বাণিজ্যিকভাবে চলার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, তারা বর্তমানে বিমানের একটি মিশ্র বহরের সক্ষমতা বিশ্লেষণ করছেন। কারণ, বর্তমানে বিমানের বহরে মূলত ইউরোপীয় এয়ারবাসের প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন ভিত্তিক বিমান নির্মাতা বোয়িংয়ের বিমানের আধিক্য রয়েছে।
বর্তমানে, বিমানের ২১টি উড়োজাহাজর মধ্যে ১৬টি বোয়িং বিমান রয়েছে। এর মধ্যে চারটি ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি ৭৩৭-৮০০ ও কানাডিয়ান বোম্বারডিয়ারসের পাঁচটি ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ টার্বোপ্রপ।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবলমাত্র সেসব পদক্ষেপ নেব, যেগুলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য সুবিধাজনক।’
সিইও আরো বলেন, তারা এ বছর নির্বিঘ্নে হজ ফ্লাইট পরিচালনা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছেন, যা রোববার (২১ মে) ভোরে শুরু হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়রলাইন্সের প্রথম হজ ফ্লাইট রোববার (২১ মে) সকালে ৪১৫জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদি আরব গেছে। জাতীয় পতাকাবাহী বিমানটি বিকার তিনটা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। এছাড়া, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরো চারটি ফ্লাইট রোববার বিভিন্ন সময়ে হজযাত্রীদের নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেছে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী হজ করতে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে ৬১ হাজার ১১১জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বাকিগুলো সৌদিয়া বা ফ্লাইনাসে যাবেন।