বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

গরমে ‘খাদ্যে বিষক্রিয়া’ হলে করণীয়

রবিবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ডেস্ক রিপোর্ট: গরমে অপুষ্টিকর কিংবা ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার কারণে ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া সমস্যা বাড়তে পারে। এ ছাড়া, বাইরের বিভিন্ন খাবার খাওয়ার কারণে কোন ক্ষতিকর জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া পেটে প্রবেশ করলে এ সমস্যা দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ই-কোলি, সালমোনেলার ও নোরোভাইরাসের মত ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘটে ফুড পয়জনিং। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে ই-কোলির মত ব্যাকটেরিয়া সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ফলে, বাইরে দীর্ঘক্ষণ রাখা খাবার খাওয়ার কারণে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

ফুড পয়জনিংয়ের প্রধান লক্ষণ: খাদ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলো ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে, বেশির ভাগ মানুষ এ ক্ষেত্রে বেশ অসুস্থতা বা বমি বমি ভাব অনুভব করেন। এমনকি বমি করেন। এর সাথে ডায়রিয়া, পেট ফাঁপার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এর পাশাপাশি খুব জ্বর, পেশিতে ব্যথা বা ঠান্ডা লাগার মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে। দূষিত খাবার খাওয়ার কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যে খাদ্য বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলো শরীরে দেখা দিতে পারে। বিরল ক্ষেত্রে, উপসর্গ দেখা দিতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

ফুড পয়জনিংয়ের সমস্যায় যখন ডাক্তার দেখাতে হবে: খাদ্য বিষক্রিয়ার চিকিৎসা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাড়িতে করা যায়। সাধারণত লক্ষণগুলো বাড়তে পারে, তবে এক সপ্তাহ বা তার পরে সেরে যায়। তবে, এ সময় ডিহাইড্রেশন রোধ করতে বিশ্রাম ও প্রচুর পরিমাণে তরল পান করতে হবে।

ফুয় পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয়: মাছ-মাংস রান্না করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, সেগুলো যেন কাঁচা না থাকে। কম সেদ্ধ বা কাঁচা মাংসে ক্ষতিকর জীবাণু থাকতে পারে। যেমন- ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর, সালমোনেলা, ই-কোলাই বা ইয়ারসিনিয়া। তাই, ভালভাবে মাছ-মাংস সেদ্ধ করে খেতে হবে।

খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন: মাংস ও উচ্ছিষ্ট খাবার সংরক্ষণের সময় সেগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন। এ ক্ষেত্রে, নিশ্চিত করুন, রান্নার ৯০ মিনিটের মধ্যে মাংস, আলু বা পাস্তার পদ (যেগুলো দ্রুত খারাপ হয়ে যায়) ফ্রিজে রাখার। এক খাবার ফ্রিজে দুই দিনের বেশি রেখে খাবেন না। খাবার পর্যাপ্ত ঠান্ডা রাখতে ফ্রিজ সবসময় পাঁচ সি (৪১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বা তার নিচে সেট করা আছে কি না, তা পরীক্ষা করুন। ফ্রিজ যাতে বেশি ভরে না যায় তা নিশ্চিত করুন। ফ্রিজ খুব বেশি ভরা থাকলে বাতাস সঠিকভাবে সঞ্চালন করতে পারে না ও খাবার সঠিকভাবে ঠান্ডা হতে পারে না।

সবজির ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করা: ফল ও শাকসবজি খাওয়ার আগে ধুয়ে নিন। সালাদজাতীয় শাকসবজি বা ফলমূল প্রবাহিত পানির নিচে রাখুন। এমনকি যদি তাদের শক্ত, বাইরের ছাল থাকে, যা আপনি খাওয়ার পরিকল্পনা করেন না। আপনি একটি উদ্ভিজ্জ ব্রাশ দিয়ে শক্ত চামড়ার ফল ও শাকসবজি পরিষ্কার করতে পারেন।

কাঁচা ও রান্না করা খাবার আলাদা রাখুন: কাঁচা মাংস, সামুদ্রিক খাবার, ডিম ও দুগ্ধজাত খাবারে থাকা জীবাণু রান্নাঘরের অন্যান্য খাবারেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ জন্য, এগুলো আলাদা রাখুন। এগুলো ধরার পরপরই হাত ভালভাবে ধুয়ে নিন সাবানপানি দিয়ে।

হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ুন: খাবারের আগে ও পরে ভালভাবে হাত ধোয়ার চেষ্টা করুন। বাইরে থাকাকালীন অ্যালকোহল-ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। স্যানিটাইজাররে অন্তত ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল থাকতে হবে। যদি, আপনার পেট খারাপ, ডায়রিয়া বা বমি হয় ও হাতে কোন ঘা বা ক্ষত থাকে, তাহলে খাবার পরিচালনা এড়িয়ে চলুন।