শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে বাইডেনের আশাবাদ উড়িয়ে দিল হামাস

শনিবার, আগস্ট ১৭, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

দোহা, কাতার: কাতারের দোহায় আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।’ তবে, বাইডেনের এ আশাবাদকে ‘মায়া’ অভিহিত করে উড়িয়ে দিয়েছেন হামাসের সিনিয়র এক কর্মকর্তা।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সামি আবু জুহরি এএফপিকে পাঠানো বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা একটি চুক্তির কাছাকাছি আছি, এটা বলা একটা বিভ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা কোন চুক্তি বা বাস্তব আলোচনায় নেই, বরং যুক্তরাষ্ট্রের হুকুম চাপিয়ে দেয়া দেখছি।’

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) কাতারের দোহায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসে গাজা যুদ্ধের মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশর। ইসরাইল এতে অংশ নিলেও যায়নি হামাস। বৈঠকটি কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। মধ্যস্থতাকারীরা ফের আগামী সপ্তাহে ব্যাপারটি নিয়ে বৈঠকে বসবেন।

সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হলেও শিগগিরই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সইয়ের আশা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সংবাদ সম্মেলনে জো বাইডেন বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরুর পর পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন চুক্তি সইয়ের খুব, খুব কাছাকাছি পৌঁছেছে।’

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র একটি নয়া প্রস্তাব পেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের দেয়া প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করেই ওই প্রস্তাব দেয়া হয়। মধ্যস্থতাকারীরা নয়া প্রস্তাবের ওপর কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানান। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নয়া প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে বেসামরিকদের জীবন বাঁচানো, গাজার জনগণের জন্য ত্রাণ ব্যবস্থা ও আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে পথ তৈরি হচ্ছে।’

তবে, বৈঠকে ইসরাইল ‘নয়া শর্ত’ দিয়েছে বলে সংবাদে বলা হয়েছে। এএফপি জানিয়েছে, ইসরাইলের নয়া শর্তের মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধবিরতির সময়ে মিশর সীমান্তে গাজার অভ্যন্তরে সৈন্য রাখা। কিন্তু, হামাসের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের এ শর্ত মানবে না। তারা গাজায় সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি চায়।

হামাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘গাজা থেকে ইসরাইলের সৈন্যদের সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করতে হবে। মিশর সীমান্তে বা অন্য কোন সীমান্তেও ইসরাইলের সৈন্য রাখা যাবে না। এ ছাড়া, যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদেরও স্বাভাবিকভাবে গাজায় প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।’

মধ্যস্থতাকারীদের বরাত দিয়ে হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক বলেছেন, ‘ইসরাইল পূর্বের আলোচনায় ‘যাতে সম্মত হয়েছিল তা মেনে চলেনি’।

এর পূর্বে, গেল বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে দোহায় আলোচনায় বসেন মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর নেতারা। তবে, তার পূর্ব মুহূর্তে হামাসের এক নেতা জানান, চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য একটি রোডম্যাপ চেয়েছিল হামাস। ইসরাইলকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে দেয়ার জন্য যে আলোচনা, তাতে তারা অংশ নেবেন না।

গেল মে মাসের শেষ দিকে জো বাইডেন যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তার ওপর ভিত্তি করেই যুদ্ধবিরতির রোডম্যাপটি হওয়া উচিত এবং ইসরাইলকে নয়া শর্ত যোগ করার জন্য অভিযুক্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘হামাসই শর্ত পরিবর্তনের দাবি করেছে।’

এ অবস্থাতে দোহায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসকে ছাড়াই দ্বিতীয় দিনের বৈঠক হয় শুক্রবার (১৬ আগস্ট)।