শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

গুণ্ডামি করে হামলা চালিয়ে কণ্ঠরোধ করতে পারবে না ছাত্রলীগ

রবিবার, আগস্ট ১৪, ২০২২

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়নের কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম। রোববার (১৪ আগস্ট) বিকালে চট্টগ্রাম সিটির সিনেমা প্যালেস মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বাম নেতারা বলেন, ‘ছাত্রলীগ এখন আর ছাত্র সংগঠন নেই। সংগঠনটি অগণতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ছাত্রলীগের অসভ্যতা, গুণ্ডামি, হামলা-নির্যাতন আর বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না। গুণ্ডামি করে, হামলা চালিয়ে সরকারের অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিস্ট আচরণের বিরুদ্ধ বাম প্রগতিশীল শক্তির কন্ঠরোধ করতে পারবে না ছাত্রলীগ।’

তারা আরো বলেন, ‘চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ঐতিহ্যবাহী স্যার আশুতোষ কলেজে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে শনিবার (১৩ আগস্ট) মানববন্ধন করছিল ছাত্র ইউনিয়ন। সেখানে ছাত্র ইউনিয়নের কয়েকজন প্রাক্তন নেতা, যারা ওই কলেজের সাবেক ছাত্র তারা অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন। এটি সরকারের বিরুদ্ধে কোন কর্মসূচি ছিল না। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোন কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগ বিনা উসকানিতে শান্তিপূর্ণ এ মানববন্ধনে বর্বর হামলা চালিয়ে দশ জনকে আহত করেছে।’

তারা বলেন, ‘সেই হামলার প্রতিবাদে শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকালে চট্টগ্রাম শহরের নিউমার্কেট মোড়ে ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়ন যৌথভাবে সমাবেশ করছিল। সেখানেও বিনা উসকানিতে ছাত্রলীগের গুণ্ডারা লাঠি, হকিস্টিক, লোহার রড নিয়ে হামলা করে। তাদের হামলা থেকে রেহাই পায় নি প্রতিবন্ধী ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী অরিত্রও। নারী কর্মীদের গায়েও তারা হাত তুলেছে। আহত করা হয়েছে আরো ১০-১২ জনকে। আমরা এ অসভ্যতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

বাম নেতারা আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগের চরিত্র এখন আর ছাত্র সংগঠনের চরিত্র নেই। বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, তারা কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরতান্ত্রিক, ফ্যাসিস্ট আচরণের সরকার। ছাত্রলীগ এ ফ্যাসিস্ট সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। হামলার সময় তারা বলেছে, ‘‘সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলায়, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কথা বলায় নাকি তারা হামলা করেছে।’’ আমরা বলতে চাই, সরকারের বিরুদ্ধে সরকারি দল কথা বলবে না। যারা বিরোধী দল আছে, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যত দিন যাচ্ছে, সরকার আরো বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠছে। এ কারণে যারা সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের পক্ষে ন্যায্য কথা বলে তাদের কণ্ঠরোধ করার জন্য ছাত্রলীগের গুণ্ডাদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। কিন্তু গুণ্ডামি করে, অসভ্যতা করে, হামলা-নির্যাতন চালিয়ে বাম প্রগতিশীল শক্তির কণ্ঠরোধ করা যাবে না। আমরা সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে কথা বলে যাব। আমরা লুটপাটের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি রাখব।’

তারা বলেন, ‘ছাত্রলীগ সারা দেশে বিভিন্নস্থানে সিপিবিসহ বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে আসছে। সামনে হয়ত আরো কঠিন সময় আসছে, ছাত্রলীগ আরো বেপরোয়া আচরণ করতে পারে, সরকার আরো বেশি কর্তৃত্ববাদী আচরণ করতে পারে। আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, ছাত্রলীগের অসভ্যতাকে আর ছাড় দেয়া হবে না। এখন থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য বাম নেতাকর্মীদের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

চট্টগ্রামের বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা সফি উদ্দিন কবির আবিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা, বাসদ চট্টগ্রাম জেলার ইনচার্জ আল কাদেরি জয়, সিপিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি কানাই লাল দাশ ও সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সিটির বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।