রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও হামলা-ভাঙচুরে জড়িতদের শাস্তি দাবি

রবিবার, আগস্ট ১১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গেল গেল সোমবার (৫ আগস্ট) বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হামলা ও ভাঙচুর করেছে এক দল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্যরা।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বিবৃতিতে জানানো হয়, গেল সোমবার (৫ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে, জয় হয়েছে সত্য ও ন্যায়ের। যখন শত শত শিক্ষার্থীর আত্মাহুতির মাধ্যমে নয়া বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছে, তখন কিছু সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্ত শিক্ষার্থীদের এ বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নৈরাজ্যে মেতে উঠেছে। তারা বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। ওই দিন অভ্যুত্থানবিরোধী দুর্বৃত্তদের নৃশংসতা থেকে বাদ যায়নি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবও। সাংবাদিক নামধারী কিছু দুর্বৃত্ত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। তারা প্রেসক্লাবে অবৈধ অনুপ্রবেশের মাধ্যমে বিভিন্ন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি চেষ্টা চালাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হত্যা, ধর্ষণ ও মাদক মামলার আসামিসহ কিছু দুর্বৃত্ত নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নানা বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।’

এ ঘটনার প্রতিবাদে গেল বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় দুর্বৃত্ত কর্তৃক চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানো হয়। সভায় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একই সাথে সদস্যরা যে কোন দামে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সম্মান সমুন্নত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এরইমধ্যে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটি চট্টগ্রামের দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করে। তারাও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হামলাকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা ও সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক নৈরাজ্যকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকা ও বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি, চিহ্নিত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বিবৃতিতে জানানো হয়, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ৬২ বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান। শুরু থেকে এ প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্র, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্তিবুদ্ধিচর্চার পীঠস্থান হিসেবে খ্যাত। চট্টগ্রামের মূলধারার পেশাদার সাংবাদিকদের দ্বিতীয় আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব তার নিজস্ব গঠনতন্ত্র দিয়ে পরিচালিত হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর অন্তর নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়। ১৫ সদস্যের একটি ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে প্রেসক্লাব পরিচালিত হচ্ছে।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্যদের মধ্যে সব মতাদর্শের মূলধারার পেশাদার সাংবাদিক রয়েছেন। বর্তমানে প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ২৬৫ জন, অস্থায়ী সদস্য ১৯ জন। প্রতি দুই বছর অন্তর কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মূলধারার পেশাদার সাংবাদিকেরা অস্থায়ী সদস্য পদের জন্য আবেদন করতে পারেন। প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত বাছাই কমিটি যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে উপস্থাপন করে। পরে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা গোপন ভোটের মাধ্যমে আবেদন করা প্রার্থীদের অস্থায়ী সদস্য পদের জন্য নির্বাচিত করেন।