ঢাকা: বোলারদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পর দুই ব্যাটার তামিম ইকবাল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্সের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট দশম আসরে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে ফরচুন বরিশাল। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এলিমিনেটর ম্যাচে বরিশাল সাত উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। রংপুর রাইডার্স-কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মধ্যেকার প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে হেরে যাওয়া দলের সাথে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে খেলবে বরিশাল।
ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১৩৫ রান করে চট্টগ্রাম। উত্তরে তামিমের ৪৩ বলে অপরাজিত ৫২ এবং মায়ার্সের ২৬ বলে ৫০ রানের সুবাদে ৩১ বল বাকী রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বরিশাল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এলিমিনেটর ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। পূর্বের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা তানজিদ তামিমকে দুই রানে বিদায় দেন বরিশালের পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। সতীর্থকে হারালেও চট্টগ্রামের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন ওপেনার ব্রাউন। পঞ্চম ওভারে ফের ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম। সাত রান করে বরিশালের পেসার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওবেড ম্যাককয়ের বলে আউট হন তিন নম্বরে নামা ইমরানউজ্জামান। ৩১ রানে দুই উইকেট হারালেও ব্রাউনের ব্যাটে চট্টগ্রামের দলীয় রান ৫০ স্পর্শ করে। কিন্তু, সপ্তম ওভারের শেষ বলে ম্যাককয়ের দ্বিতীয় শিকার হন দুইটি চার ও তিনটি ছক্কায় ২২ বলে ৩৪ রান করা ব্রাউন। দলীয় ৫২ রানে ব্রাউনের বিদায়ের পর চট্টগ্রামের মিডল অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হন। একটি করে চার-ছক্কায় নিউজিল্যান্ডের টম ব্রুস ১১ বলে ১৭ রান ও সৈকত আলি ১১ রানে আউট হন। ৮৪ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে চট্টগ্রাম। ষষ্ঠ উইকেট ১৯ বলে ২৬ রান যোগ করে চট্টগ্রামের রান তিন অংক পার করেন অধিনায়ক শুভাগত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোমারিও শেফার্ড। ১৫তম ওভারে শুভাগতকে শিকার করে বরিশালকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন ক্যারিবীয়ান মিডিয়াম পেসার কাইল মায়ার্স। চারটি চারে ১৬ বলে ২৪ রান করেন শুভাগত। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ইংল্যান্ডের পেসার জেমস ফুলারের বলে শেফার্ড ১১ রানে সাজঘরে ফিরলে, চট্টগ্রামের চ্যালেঞ্জিং স্কোরের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নয় উইকেটে ১৩৫ রান করে চট্টগ্রাম। বরিশালের মায়ার্স-সাইফুদ্দিন ২৮ রানে এবং ম্যাককয় ২৯ রানে দুইটি করে উইকেট নেন।
১৩৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলে চট্টগ্রামের স্পিনার শুভাগতর বলে খালি হাতে বিদায় নেন বরিশালের ওপেনার সৌম্য সরকার। শুরুতে সতীর্থকে হারালেও সেটিকে চাপ মনে করেননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল ও তিন নম্বরে নামা মায়ার্স। পাওয়ার প্লের সুবিধা নিয়ে চট্টগ্রাম বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়ে ছয় ওভারে ৭৩ রান তোলেন তামিম ও মায়ার্স। এরমধ্যে শুভাগতর করা পঞ্চম ওভারে তিনটি ছক্কা ও দুইটি চারে ২৬ রান নেন মায়ার্স। নবম ওভারে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ২৫ বল খেলা মায়ার্স। পরের ওভারে দলের রান ১০০ পৌঁছে দিয়ে ওমানের পেসার বিলাল খানের বলে সাজঘরে ফিরেন তিনটি বাউন্ডারি ও পাঁচটি ওভার বাউন্ডারিতে ২৬ বলে ৫০ রান করা মায়ার্স। দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সাথে ৫৪ বলে ৯৮ রান যোগ করেন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া মায়ার্স। মায়ার্স ফেরার পর দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলারকে নিয়ে বরিশালের ২২ বলে ২৫ রান যোগ করে বরিশালকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেন তামিম। দুইটি চারে ১৩ বলে ১৭ রান করে আউট হন এবারের আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা মিলার। এরপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে বাকী ১১ রান যোগ করে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন তামিম। এবারের আসরে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে নয়টি চারে ৪৩ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম। ছয় রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। চট্টগ্রামের শুভাগত-বিলাল ও শেফার্ড একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৩৫/৯, ২০ ওভার (ব্রাউন ৩৪, শুভাগত ২৪, সাইফুদ্দিন ২/২৮)।
ফরচুন বরিশাল: ১৩৬/৩, ১৪.৫ ওভার (তামিম ৫২*, মায়ার্স ৫০, শেফার্ড ১/১৭)।
ফল: ফরচুন বরিশাল সাত উইকেটে জয়ী।