শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

শিরোনাম

চট্টগ্রামে প্রাক্তন সাংসদ মোতাহেরুল, সাবেক হুইপ সামশুল ও ছেলে শারুনের নামে মামলা

বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১০, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

পটিয়া, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সাংসদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান আসামি ও সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, হুইপের পুত্র শারুন, হুইপের ছোট ভাই মহব্বত, উপজেলা পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান, প্রাক্তন পৌর মেয়র, ১৫ প্রাক্তন চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলরসহ ১৩৮ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলা করা হয়েছে পটিয়া থানায়।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার বাড়ীর বকসুর পুত্র মো. বাবু বাদী হয়ে এ বিস্ফোরক মামলাটি করেন। মামলায় ৬৮ জনকে এজহার ভুক্ত আসামি করে আরো ৬০-৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলায় পটিয়ার প্রাক্তন দুই সাংসদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সামশুল হক চৌধুরী, তার ছোট ভাই মোহাম্মদ ফৌজলুল হক চৌধুরী প্রকাশ মহব্বত, প্রাক্তন হুইপের পুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, প্রাক্তন পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, কোলাগাঁও ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চৌধুরী, হাবিলাসদ্বীপ ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ফৌজুল কবির কুমার, কুসুমপুরা ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান জাকারিয়া ডালিম, জিরি ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম খান টিপু, আশিয়া ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান এমএ হাশেম, জঙ্গল খাইন ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ, বড়লিয়া ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম শানু, কেলিশহর ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সরোজ কান্তি সেন নান্টু, ধলঘাট ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান রণবীর ঘোষ টুটুন, হাইদগাঁও ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বদরুউদ্দিন মো. জসিম প্রকাশ বিএম জসিম, দক্ষিণ ভূর্ষি ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম, ভাটিখাইন ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. বখতিয়ার উদ্দিন, কচুয়াই ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম, খরনা ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, শোভনদন্ডী ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মো. এহসানুল হক, প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছৈয়দ, প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবদুল খালেক, প্রাক্তন পৌর কাউন্সিলর রুপক কুমার সেন, গোফরান রানা, গিয়াস উদ্দিন আজাদ, জসিম উদ্দিন, শফিউল আলম, শেখ সাইফুল ইসলাম, সরওয়ার কামাল রাজিব, আওয়ামী লীগের নেতা লিটন বড়ুয়া, ডিএম জমির উদ্দিন, মোজান্মেল হক লিটনসহ আরো অনেককেই আসামি করা হয়েছে।

মো. বাবু এজহারে উল্লেখ করেছেন, গেল ৫ অক্টোবর সকাল দশটার দিকে উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের কুরাঙিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তার উপর আসামিরা বাদীর উপর বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে পথরোধ করে। হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম করা হয় ও অন্ডকোষ চেপে ধরা হয়। এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য উত্তেজনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অপমান ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া। এ সময় আসামিরা নগদ পাঁচ হাজার ১০০ টাকা নিয়ে যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ দিকে, উপজেলাজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে গুঞ্জন উঠেছে গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর পটিয়ায় বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় দুই প্রাক্তন সাংসদসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মীরা মামলার আসামি হলেও পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শোভনদন্ডী ইউনিয়নের নাছির উদ্দিন কোন মামলার আসামি হননি।

এর কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘নাছির উদ্দিনের ছোট ভাই সাইফুদ্দিন পটিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হওয়ার কারণে তাকে কোন মামলায় আসামি করা হচ্ছে না। বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতা নাছির উদ্দিনের ছোট ভাই বিএনপির নেতা সাইফুদ্দিনকেও কোন মামলায় আসামি করা হয়নি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘নাছির উদ্দিন প্রাক্তন সাংসদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে গেল ৪ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার মিছিলে গুলি বর্ষণ ও হামলার সময় ছিলেন। নাছির উদ্দিন সব সময় মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী সাথে থাকতেন। সবাই যখন মামলার আসামি হচ্ছেন, কেন নাছির আসামি হচ্ছে না এ প্রশ্ন এখন তাদের। এভাবে এক ভাই আরেক ভাইকে মামলা থেকে বাঁচিয়ে দলের ভেতর বৈষম্য সৃষ্টি করছেন।’

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, ‘গেল মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাতে থানায় একটি বিস্ফোরক আইনে মামলা রজু করা হয়েছে। মামলায় ৬৮ জনকে এজহার ভুক্ত আসামি ছাড়াও আরো ৬০-৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’