শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

চট্টগ্রামে মাসব্যাপী ৩০তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটির রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ডে মাসব্যাপী ‘৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৩’ শুরু হয়েছে। দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এ মেলার আয়োজন করছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ এমএ লতিফ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চেম্বারের পরিচালক ও সিআইটিএফ-২০২৩ কমিটির চেয়ারম্যান একেএম. আক্তার হোসেন, কমিটির কো-চেয়ারম্যানবৃন্দ, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ, সাবেক সভাপতিমন্ডলী ও পরিচালকবৃন্দ, অনারারী কনসাল, সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন ট্রেডবডি ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিসহ সিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের জিডিপি ৮০ বিলিয়ন থেকে ৪৭৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। একই সাথে বেড়েছে মাথাপিছু আয়ও। এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব গুণে। চিটাগাং চেম্বারের মত এত সফলভাবে কোন ট্রেডবডি মেলা আয়োজন করতে পারে নি।’

এ মেলার জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যুর প্রয়োজন অনস্বীকার্য উল্লেখ করে তিনি বে-টার্মিনালের বিপরীতে এ মেলার জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যু সহসা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে বলে জানান ও আগামী বছর থেকে সেখানে সিআইটিএফ আয়োজনের আশা প্রকাশ করেন।

তিনি চট্টগ্রামের হামিদচরে পার্কিং সুবিধাসহ মেলা আয়োজনের জন্য একটি স্থায়ী কনভেনশন হল স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। এ ছাড়া, তিনি পবিত্র রমজানসহ সব ধর্মীয় উৎসবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না করতে ও এর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকে কঠোর হওয়ার আহবান জানান।

মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, সিটির জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন সংস্থাসহ সিটি কর্পোরেশন দশ হাজার কোটি টাকার ও চাক্তাই থেকে বড়াইপাড়া পর্যন্ত এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে খাল খনন করার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

তিনি চট্টগ্রাম সিটির স্থায়ী ও টেকসই উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করে সব শ্রেণির পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি চট্টগ্রামকে নান্দনিক ও পরিবেশবান্ধব মডেল শহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

রেজাউল করিম শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ গড়ে তোলার কার্যক্রম নেয়া হয়েছে ও ইতিমধ্যে দুইটি ওয়ার্ডে তা বাস্তবায়িত হয়েছে বলে জানান।

এমএ লতিফ বলেন, ‘চিটাগাং চেম্বার দীর্ঘ দিন ধরে বাণিজ্য মেলা আয়োজনে তার পরিচ্ছন্ন ইমেজ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে সারা দেশ থেকে ছোট বড় ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ও শিল্পায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে, অবকাঠামো উন্নয়ন বেড়েছে। চট্টগ্রামকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এক লাখ কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে; যা দেশের মোট উন্নয়নের ৩৫ শতাংশ।’

ব্যবসায়ীদের কাজের ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত হলে অর্থনীতির উন্নয়ন ব্যাহত হবে উল্লেখ করে তিনি ব্যবসায়বান্ধব নীতি প্রণয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জন করতে আমাদের রপ্তানি ৩০০ বিলিয়ন ডলার করার পাশাপাশি শিল্পায়ন ও এসএমই খাতের উন্নয়ন করতে হবে।’

দেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় বেসরকারি খাতের অবদান ৮০ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন বলে জানান। এ ছাড়া, সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন উৎস খুঁজে বের করার উপর গুরুত্বারোপ করেন এমএ লফিত।

মাহবুবুল আলম বলেন, ‘গত তিন দশক ধরে চট্টগ্রাম বাণিজ্য মেলা চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটি নিখাদ বিনোদনের উৎস ও মিলন মেলায় রূপ নিয়েছে।’

তিনি বেসরকারী খাতের উন্নয়নে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব ধরনের অনুমোদন চট্টগ্রাম থেকে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে দেয়ার ব্যবস্থা করা, রপ্তানী বহুমূখীকরণের জন্য নতুন ক্ষেত্র, উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উপর গুরুত্বারোপ করে চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

একেএম আক্তার হোসেন মেলার সার্বিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। চেম্বার পরিচালক ও সিআইটিএফ-২০২৩ কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন।

প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ ও চেম্বার নেতৃবৃন্দ ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

বলে রাখা ভাল, মাসব্যাপী এ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা পলোগ্রাউন্ডে প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলবে।