মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

চবির শিক্ষার্থী হত্যা: চট্টগ্রামে শেখ হাসিনাসহ ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্র হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭০০ জনের বিরুদ্ধে সিটির চান্দগাঁও থানায় মামলা হয়েছে।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে এ মামলা করা হয়, যেখানে ২০৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরো ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।’

এ মামলায় চট্টগ্রামের চার সাংবাদিক, প্রাক্তন দুই ওসিসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ রেহেনা, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান, প্রাক্তন মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, প্রাক্তন সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রাক্তন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, দিলীপ কুমার আগরওয়াল, খাগড়াছড়ির প্রাক্তন সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, চসিকের প্রাক্তন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের প্রাক্তন ডিআইজি নূরে আলম মিনা, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) প্রাক্তন কমিশনার সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, কোতোয়ালী থানার প্রাক্তন ওসি মোহাম্মদ মহসিন, পাঁচলাইশ থানার প্রাক্তন ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া, খাগড়াছড়ির জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মং শৈ প্রু।

আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, সময় টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান কমল দে, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক ও একুশে টিভির প্রাক্তন আবাসিক সম্পাদক রফিকুল বাহারকে। এছাড়াও, মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় তরুয়া অংশ নেন। আসামিদের কয়েকজনের নির্দেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আসামিদের অনেকে হামলায় যোগ দেন। গেল ১৮ জুলাই নগরের চান্দগাঁও এলাকায় গুলিতে আহত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হৃদয়কে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় ২৩ জুলাই মারা যান তিনি।’

বাদী আজিজুল হক, হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বন্ধু মামলায় উল্লেখ করেছেন যে, ১-৪০ নম্বর আসামিদের নির্দেশনা, অর্থায়ন ও প্ররোচনায় প্রাক্তন আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন আন্দোলনকারীদের গুলি করার নির্দেশ দেন। এরপর ৪১-২০৬ নম্বর এবং অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জন হামলা চালিয়ে অস্ত্রসহ আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করে।

প্রসঙ্গত, গেল ১৬ জুলাই চান্দগাঁও এলাকায় সংঘর্ষের সময় হৃদয় চন্দ্র তরুয়া গুলিবিদ্ধ হন এবং ২৩ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বাড়ি পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলায়। রতন চন্দ্র তরুয়া ও অর্থনা রানী দম্পতির ছেলে।